‘আ কমপ্লিট আননোন’ সিনেমা মুক্তির তারিখ জানাননি নির্মাতা।
Published : 21 Mar 2024, 10:16 AM
গত বছর থেকে শোনা যাচ্ছিল গানের কবি অস্কার জয়ী বব ডিলানকে নিয়ে গল্প বোনা হবে পর্দায়। কিন্তু সেই গল্পের কথা সামনে আসেনি। এবারের খবর হল, ডিলানের বায়োপিকের কাজ শুরু হয়েছে, যার শিরোনাম ‘আ কমপ্লিট আননোন’।
এ সিনেমায় বব ডিলানের চরিত্রে অভিনয় করছেন এ সময়ের জনপ্রিয় তারকা টিমোতে শ্যালামে। সিনেমার তার ফার্স্ট লুকও প্রকাশ হয়েছে। ছবিতে তাকে গিটার হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে গায়কের বেশে।
সিএনএন লিখেছে, নির্মাতা জেমস ম্যানগোল্ডের পরিচালনায় বব ডিলানের বায়োপিকের এই ছবি প্রকাশ্যে আসার পরে তা ছড়িয়ে পড়েছে সোশাল মিডিয়ায়।
ম্যানগোল্ড জানান, গত বছর হলিউডে ধর্মঘটের কারণে সিনেমার কাজ তেমন এগোয়নি। মাত্র কিছুদিন আগে শুটিং শুরু করেছেন।
এই নির্মাতার ভাষ্য, বায়োপিক বলতে যা বোঝায় তিনি আসলে তেমন কিছু করতে চাইছেন না। বব ডিলানের জীবনের কয়েকটি মুহূর্ত তিনি তুলে আনতে চাইছেন।
সিনেমাটির গানে কণ্ঠও দেবেন শ্যালামে। অবশ্য এই প্রথম নয়, উইলি ওয়াঙ্কা চরিত্রে অভিনয় করার সময়ও গান গেয়েছিলেন এই অভিনেতা।
এর আগেও ডিলানকে নিয়ে সিনেমা বানিয়েছেন নির্মাতারা। ২০০৭ সালে ‘আই অ্যাম নট দেয়ার’ নামের একটি সিনেমা বানান টড হেইনেস। সেখানে ডিলানের জীবনের কয়েকটি অধ্যায় দেখানো হয়। ওই সিনেমায় ছয়জন অভিনেতা নানা বয়সের ডিলান হয়ে পর্দায় আসেন।
২০১৯ সালে মার্টিন স্কোরসেজি ‘রোলিং থান্ডার রিভিউ’ নামের একটি কনসার্ট ফিল্ম নির্মাণ করেন। সেখানে ডিলানের ১৯৭৫ সালের গানের সফর তুলে ধরা হয়।
শ্যালামের অভিনয় শুরু আলোচিত টিভি সিরিজ ‘হোমল্যান্ড’ দিয়ে। তখন তিনি নেহাতই কিশোর।
এরপর ২০১৭ সালে ‘কল মি বাই ইয়োর নেম’ দিয়ে সমালোচকদের নজর কাড়েন শ্যালামে।
ওই সিনেমার জন্য কেবল প্রশংসা নয়, অস্কার ও বাফটায় সেরা অভিনেতার মনোনয়নও পেয়েছিলেন তিনি।
এছাড়া গ্রেটা গারউইগের ‘লেডি বার্ড’, লিটল উইমেন’ সিনেমায় অভিনয় করে ফের আলোচনায় আসেন শ্যালামে।
এরপর ২০১৮ সালে ফিলিক্স ভ্যান গ্রেনেনজেনের ‘বিউটিফুল বয়’ সিনেমায় মার্কিন লেখক নিক শেফের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি জনপ্রিয়তা পান।
অনেক সমালোচক তার মধ্যে টাইটানিক অভিনেতা লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিওর ছাপ দেখতে পান।
১৯৪১ সালের ২৪ মে মিনেসোটার ডুলুথে এক ইহুদি পরিবারে জন্ম নেওয়া রবার্ট অ্যালেন জিমারের হাতে প্রথম গিটার আসে ১২ বছর বয়সে। দুই বছরের মাথায় তিনি স্কুলের ব্যান্ডে বাজাতে শুরু করেন।
উডি গুথরির গান অল্প বয়সেই সেই কিশোরকে টেনে নিয়েছিল লোকসংগীতের পথে। আর বব ডিলান নামটি তিনি নিয়েছেন ইংরেজ কবি ডিলান টমাসের নাম থেকে।
বব ডিলানের সংগীত ক্যারিয়ারের সূচনা হয় ১৯৫৯ সালে মিনেসোটার এক কফি হাউজে। ঠিকানা বদলে ১৯৬১ সালে নিউ ইয়র্কে যাওয়ার পরের বছরই তার প্রথম অ্যালবাম ‘বব ডিলান’ বাজারে আসে।
এই শিল্পী, গীতিকার খ্যাতির তুঙ্গে পৌঁছান গত শতকের ষাটের দশকে। হাতে গিটার আর গলায় ঝোলানো হারমোনিকা হয়ে ওঠে তার ট্রেডমার্ক।
সে সময় তার ‘ব্লোয়িং ইন দ্য উইন্ড’ আর ‘দ্য টাইমস দে আর আ-চেইঞ্জিং’ এর মত গানগুলো পরিণত হয়েছিল যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের গণসংগীতে।
বব ডিলানের তারুণ্যের গানগুলো হয়ে উঠেছিল আমেরিকান অস্থিরতার প্রতীক। সেখানে এসেছে রাজনীতি, সমাজ আর দর্শনের ছায়া।
ষাটের দশকে যাদের গান আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলনে প্রেরণা যুগিয়েছে, তাদের মধ্যে বব ডিলান একজন। ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্টিন লুথার কিংয়ের বক্তৃতার সময় ডিলান ছিলেন পিট সিগার, জোয়ান বায়েজদের সঙ্গে মিছিলের সামনের সারিতে।