মঞ্চনাটকের টিকেটও এখন হাজার টাকা

টিকেটের দাম বৃদ্ধির কারণে নাট্যকর্মীদের অনেকেও এখন আর নিয়মিত নাটক দেখছেন না। শিক্ষার্থীদের অনেকে নাটক দেখার উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন।

পাভেল রহমানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2023, 03:40 AM
Updated : 27 March 2023, 03:40 AM

বাজারে সব কিছুর দামই এখন বাড়তি, ঢাকায় মঞ্চনাটকের টিকেটও বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়।

একসময় শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মীদের জন্য ১০০ টাকায় টিকেট বিক্রির প্রচলন ছিল। তবে এখন অনেক নাটকেই আর কাউন্টারে ওই দামে টিকেট মেলে না। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অভিমত রয়েছে নাট্যাঙ্গনে।

নাটক সংশ্লিষ্টদের একাংশ মনে করছেন, বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় ১০০ টাকার টিকেট থাকা উচিত নয়। কারণ প্রতিটি প্রদর্শনীতে নাট্যদলগুলোকে অনেক বেশি পরিমাণ ভর্তুকি গুণতে হয়, এত কম টাকায় টিকেট বিক্রি করে নাট্যদলগুলোর প্রদর্শনী খরচ উঠে আসে না।

আবার কেউ কেউ মনে করছেন, ১০০ টাকার টিকেট না থাকলে শিক্ষার্থীদের অনেকেই নাটক দেখার উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। নিম্ন আয়ের মানুষও বিচ্ছিন্ন হবে মঞ্চনাটক থেকে।

১৯৭৩ সালে বাদল সরকার রচিত ‘বাকি ইতিহাস’ নাটকটি মঞ্চস্থ করেছিল নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়। আর সেই নাটক দর্শক উপভোগ করেছিল টিকেট কেটে। স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়মিত টিকেটের বিনিময়ে নাট্য প্রদর্শনীর সূচনা তখন থেকেই। অবশ্য স্বাধীনতার আগেও বিচ্ছিন্নভাবে টিকেটের বিনিময়ে কিছু নাট্য প্রদর্শনী হয়েছে।

টিকেটের বিনিময়ে নাট্যচর্চা শুরুর পথিকৃৎ নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় গত জানুয়ারি মাসে আয়োজন করেছিল ‘আলী যাকের নতুনের উৎসব’। সেখানে তিনটি ক্যাটাগরির টিকেট মূল্য ছিল ৩০০, ৫০০ এবং ১০০০ টাকা।

আবার গত ১৩ মার্চ থিয়েট্রেক্স প্রযোজিত ‘স্বর্ণবোয়াল’ নাটকটির মঞ্চায়নে দেখা যায় ৫০০ এবং ৩০০ টাকার টিকেট বিক্রি করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য তারা ২০০ টাকার টিকেটও রেখেছিল।

এর আগে ফেব্রুয়ারিতে এই স্বর্ণবোয়াল নাটকটি একই মিলনায়তনে বিনা টিকেটে আমন্ত্রিত দর্শকের জন্য মঞ্চায়ন করেছিল থিয়েট্রেক্স। 

দাম বাড়ল কখন থেকে

নাট্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোভিড মহামারীর আগেও মঞ্চ নাটকের নিয়মিত টিকেটের দাম ছিল ৫০০/৩০০/২০০ টাকা। নাট্যকর্মী ও শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ টাকায় দেখার সুযোগ ছিল। মোটামুটি বছর পাঁচেক এই দামেই নাটকের টিকেট বিক্রি হয়েছে।

আর দশ বছর আগে টিকেটের দাম ছিল ১০০/২০০/৩০০ টাকা। সে সময় শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ টাকার টিকেটও ছিল।

ওপেন স্পেস থিয়েটার নামে একটি নাট্যদল ‘টুয়েলভ অ্যাংরি ম্যান’ নামের একটি নাটক মঞ্চায়নের মাধ্যমে ঢাকার নাট্যাঙ্গনে প্রশংসিত হয়। এ নাট্যদলটি সবচেয়ে বেশি দামে নাটকের টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। মূলত উচ্চবিত্তের দর্শকই তাদের নাটক বেশি দেখেন।

২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে যাত্রা শুরু করে ওপেন স্পেস থিয়েটার। এ গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছেন মাহ্জাবীন চৌধুরী ও এম আরিফুর রহমান। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তারা ড্রামা ক্লাবে যুক্ত ছিলেন।

আরিফুর রহমান ও মাহ্জাবীন চৌধুরী নিজেদের অর্থায়নে থিয়েটার ক্লাবটি দাঁড় করালেও বর্তমানে টিকেট বিক্রির টাকা থেকেই নাট্যদলটি পরিচালিত হয়। অনলাইন ও অফলাইন দুভাবেই ‘ওপেন স্পেস থিয়েটার’ তাদের শোর টিকেট বিক্রি করে। তাদের অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজে শোর কয়েক মাস আগে থেকেই টিকেট বিক্রি করা হয়।

আগামী ২৮ মার্চ নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে ওপেন স্পেস থিয়েটারের ‘টুয়েলভ অ্যাংরি ম্যান’ নাটকটির মঞ্চায়ন হবে। টিকেটের দাম ১৫০০/১০০০/৫০০ টাকা, শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০০ টাকা।

দলটির টিকেট বুকিং নম্বরে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, আগে কিনলে কিংবা একসঙ্গে বেশি টিকেট কিনলে মূল্য ছাড় দেওয়া হয়।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ঘোড়ামারা গ্রামে মণিপুরি থিয়েটারের নিজস্ব মিলনায়তন 'নটমণ্ডপ'। 

ভিন্ন উদাহরণ তৈরি করেছে ঢাকার বাইরে মৌলভীবাজারের মণিপুরি থিয়েটার। কমলগঞ্জ উপজেলার ঘোড়ামারা গ্রামে নিজস্ব মিলনায়তন গড়ে নিয়েছে তারা। 'নটমণ্ডপ' নামের এই মিলনায়তনে টিকেটের বিনিময়ে নাট্য প্রদর্শনী হয়।

মণিপুরি থিয়েটারের সভাপতি শুভাশিস সিনহা গ্লিটজকে বলেন, "আমাদের এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ টাকার টিকেট যেমন থাকে, আবার গ্রামের মিলনায়তনে ৫০০ টাকার টিকেটও বিক্রি করি। নটমণ্ডপে টিকেট ক্যাটাগারি থাকে ৫০০/৩০০/২০০/১০০/৫০ টাকা। এতে করে গ্রামের সব শ্রেণির দর্শকই নাটক দেখতে আসেন।"

সঙ্কট কোথায়

বর্তমানে ঢাকায় নিয়মিত টিকেটের বিনিময়ে নাট্যচর্চা হলেও দেশের বেশিরভাগ জেলায় তা হচ্ছে না। কোনো কোনো জেলা শহরে মঞ্চনাটকের চর্চাই বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকাতেও কেবল নির্দিষ্ট কিছু দর্শক নিয়মিত মঞ্চনাটক দেখছেন বলে মনে করেন নাট্য সংশ্লিষ্টরা।

অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদ সম্প্রতি থিয়েটার বিষয়ক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেন, ঢাকা শহরে নিয়মিত নাটক দেখেন, এমন দর্শকের সংখ্যা ‘৫ হাজারের বেশি নয়’।

এদিকে টিকেটের দাম বৃদ্ধির কারণে নাট্যকর্মীদের অনেকে এখন আর নিয়মিত নাটক দেখছেন না। শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ মঞ্চনাটক দেখা থেকে দূরে সরে গেছেন। নিম্ন আয়ের অনেকেই মঞ্চনাটক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন।

নাট্যকর্মী মাহফুজ সুমন গ্লিটজকে বলেন, “২০০৮-০৯ সালের দিকে আমার মনে আছে, আমরা দলবেঁধে নাটক দেখতাম। কোনো নতুন নাটকের মঞ্চায়ন হলে আমাদের নাট্যদলের বড় ভাইয়েরা ঘোষণা দিতেন, কে কে নাটক দেখবা? আমরা দল থেকেই ২০/২৫জন একসঙ্গে নাটক দেখতাম। তখন ৫/৭ জনের টাকা না থাকলেও সেটা বড় ভাইয়েরা দিয়ে দিতেন।

“এখন সেই বড় ভাইয়েরা নিজেদের মতো করে একা একা নাটক দেখেন। কারণ যাদের টাকা নেই, তাদের টিকেট কেটে দিতে হলেও তো ২/৩ হাজার টাকা লেগে যায়। এখন যাদের আর্থিক সামর্থ্য আছে, থিয়েটার যেন তাদের মাধ্যম হয়ে উঠছে। আর্থিকভাবে দুর্বলেরা থিয়েটার থেকে ঝরে যাচ্ছে। কিন্তু থিয়েটারের আজকের অবস্থানটা কিন্তু তৈরি হয়েছে নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্তের শ্রমে-ঘামে। এখন থিয়েটার হয়ে উঠছে উচ্চবিত্তের বিনোদন মাধ্যম।” 

থিয়েটার পত্রিকা ক্ষ্যাপার নির্বাহী সম্পাদক অপু মেহেদী বলেন, “আর্থিক ব্যয় নির্বাহের জন্য অর্থের প্রয়োজন আছে। কিন্তু চড়া মূল্যে টিকিটের কারণে শিক্ষার্থীরা যদি নাটক দেখা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে, তবে আমরা কাদের জন্য থিয়েটার করব? থিয়েটার যদি শুধু উচ্চবিত্ত শ্রেণির বিনোদনের জায়গা হয়ে ওঠে, তখন এখানে মতাদর্শের যে কথা বলা হয় সেটা থাকবে কিনা আমি সন্দিহান।

“এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এবং সব শ্রেণির মানুষের কাছে রাখতে রাষ্ট্রকে ভর্তুকি দিতে হবে। টিকেটের মূল্য বাড়ানোর মানে হল শিক্ষার্থীদের থিয়েটার থেকে আরও দূরে ঠেলে দেওয়া।”

নাট্যগুরুরা কী বলেন

জাতীয় নাট্যশালায় এক হাজার টাকায় নাটকের টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। এ বিষয়টিকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবেই দেখতে চান সাংস্কৃতিক সংগঠক রামেন্দু মজুমদার। তবে ১০০ টাকার টিকেটও থাকা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

রামেন্দু মজুমদার বলেন, “বর্তমান বাস্তবতায় নাটকের টিকেট ৫০০ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। তাতে নিম্ন আয়ের দর্শক ও শিক্ষার্থীরা নাটক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হবে।”

জাতীয় নাট্যশালায় প্রতি সন্ধ্যায় সরকার থেকে ভর্তুকি দেওয়া হয়। সেই ভর্তুকি দেওয়া মিলনায়তনে এক হাজার টাকায় টিকেট বিক্রি করা উচিত নয় বলে মনে করেন নাট্যকার-নির্দেশক মামুনুর রশীদও।

গ্লিটজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি তিনি বলেন, “আমরা তো সরকারের ভর্তুকি নিয়েই মিলনায়তন ভাড়া কম পাচ্ছি। সরকার ভর্তুকিটা দিচ্ছে যেন সব শ্রেণির মানুষ নাটক দেখার সুযোগ পায়। সেখানে এক হাজার টাকার টিকেট নাটকে থাকা উচিত না। এতে করে নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত দর্শকের নাটক দেখার আকাঙ্ক্ষা কমে যাবে।”

রামেন্দু মজুমদার বলেন, “কেউ যদি বেসরকারি কোনো মিলনায়তন বা বাণিজ্যিক স্পেস ভাড়া নিয়ে নাটকের প্রদর্শনী করে এবং যথাযথ নিয়ম মেনে চড়া দামে টিকেট বিক্রি করে, সেটা তারা করতে পারে। কিন্তু জাতীয় নাট্যশালায় সব শ্রেণির মানুষ এবং শিক্ষার্থীরাও যেন নাটক দেখতে পারে তার ব্যবস্থা থাকা উচিত।

“এটা সত্য, এখন নাট্যদলগুলোর অনেক খরচ করতে হয় প্রদর্শনীতে। এর জন্য সরকারি ভর্তুকি বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু মিলনায়তনে নিম্ন আয়ের মানুষও যেন আসতে পারে, তার সুযোগ থাকতে হবে। কেউ পেশাদার থিয়েটার করতে চাইলে, তার বাণিজ্যিক স্পেসেই যাওয়া উচিত। এতে করে পেশাদার থিয়েটার চর্চারও নতুন স্পেস তৈরি হবে।”

বাণিজ্যিক স্পেসে পেশাদার থিয়েটার চর্চার বিকাশেও সরকারি প্রণোদনা থাকা উচিত মত দিয়ে তিনি বলেন, “জাতীয় নাট্যশালা বাণিজ্যিক স্পেস হওয়া উচিত নয়, এটা সব শ্রেণিপেশার মানুষের থাকা উচিত। এখানে কীভাবে কম টাকায় সব মানুষ একসঙ্গে বসে নাটক দেখতে পারে, তার জন্য সরকারকে ভর্তুকি বাড়াতে হবে।”

ভর্তুকিতে সমাধান?

জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে নাটকের প্রদর্শনীর জন্য সরকার থেকে প্রতি সন্ধ্যায় ৩৫/৪০ হাজার টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়। সরকারের তরফ থেকে ভর্তুকির কারণে নাট্যদলগুলো নাট্যশালার মূল মিলনায়তনটি সাড়ে ৫ হাজার টাকায়, পরীক্ষণ থিয়েটার হল সাড়ে ৩ হাজার টাকায় এবং স্টুডিও থিয়েটার হল ২৪০০ টাকায় ভাড়া নিয়ে নাটক মঞ্চায়ন করতে পারে।

তবে নাট্যকর্মীরা বলছেন, নাটকের প্রদর্শনী করতে গেলে যে পরিমাণ লাইট, সাউন্ডসহ অন্যান্য কারগরি বিষয় দরকার হয়, তার পর্যাপ্ত সুবিধা নাট্যশালায় নেই। ফলে বাইরে থেকে ভাড়ায় এনে নাটক মঞ্চায়ন করতে হয়। শিল্পীদের কোনো রকম সম্মানী না দিয়েই প্রতি প্রদর্শনীতে গড়ে ২০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়।

কোনো কোনো রেপার্টরি নাট্যদল শিল্পীদের সম্মানী দেওয়ার মধ্য দিয়ে পেশাদার থিয়েটার চর্চার স্বপ্ন দেখছে। নাট্যশালায় প্রদর্শনীর খরচের কারণেই তারা টিকেটের দাম বৃদ্ধির পক্ষে।

নাটক মঞ্চায়নে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনেও। মহিলা সমিতির ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা গাজী ফিরোজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ মিলনায়তনে প্রতি সন্ধ্যার জন্য ভাড়া নেওয়া হয় সাড়ে ১১ হাজার টাকা। কিন্তু নাটকের মঞ্চায়ন হলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা  দেওয়া হয়। নাট্যদলগুলো থেকে নেওয়া হয় ৫ হাজার টাকা। এছাড়া মহিলা সমিতি আরও গড়ে অন্তত ৫ হাজার টাকা ভর্তুকি দেয়।”

আসাদুজ্জামান নূর সংস্কৃতি মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার সময় মহিলা সমিতিতে প্রতি সন্ধ্যায় নাটকের প্রদর্শনীর জন্য মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা করে ভর্তুকির ব্যবস্থা করেছিলেন। সেটি এখনো অব্যহত থাকায় কম টাকায় মিলনায়তন বরাদ্দ পাচ্ছে নাট্যদলগুলো।

সাবেক মন্ত্রী ও নাট্য অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর গ্লিটজকে বলেন, “সব শ্রেণির মানুষ যেন মঞ্চনাটক দেখতে পারে। তার জন্যই তো ভর্তুকি দেওয়া।”

তবে নাট্যদলগুলোর প্রদর্শনী খরচ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে মন্তব্য করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “জাতীয় নাট্যশালাতেও কিন্তু সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। এর সাথে যদি বিভিন্ন ব্যাংক বা বেসরকারি খাতগুলো যুক্ত হয়। তারা নাটকের টেকনিক্যাল যে সাপোর্টগুলোর দরকার হয়, সেগুলোর পেছনে স্পন্সর করে বা একটা ভর্তুকি দেয়। তাহলে কিন্তু নাট্যদলগুলোর প্রদর্শনী খরচ কমে আসবে।

“এছাড়া নাট্যদলগুলোকে যদি নাট্য প্রদর্শনী অনুযায়ী প্রণোদনার জন্য একটা বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া যায়। তবে টিকেটের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না।”

আসাদুজ্জামান নূর মনে করেন, সরকারি বা বেসরকারি আর্থিক খাতগুলোরও ‘দায়িত্ব রয়েছে’ জনগণকে শিল্পচর্চার সঙ্গে যুক্ত থাকতে সহায়তা করার।

“শিক্ষার্থীদের শিল্পের সান্নিধ্যে রাখার জন্য পৃথিবীর সব দেশেই বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয়। বেশি টাকা দিয়ে টিকেট কেটে অনেক শিক্ষার্থী হয়তো নাটক দেখতে আসবে না। এতে করে থিয়েটার দেখার জন্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

“তাই আমি মনে করি, সামনের দিকে ২/৩টা সারি ১ হাজার টাকায় বিক্রি করা যেতে পারে। এছাড়া ৫০০/৩০০ টাকার পাশাপাশি ১০০ টাকার টিকেটও থাকা উচিত। বেশি টাকায় টিকেট বিক্রি হলে নাট্যদলগুলো অর্থনৈতিক সাপোর্ট পাবে, এটা সত্য। তারা আরো বেশি ভালো নাটক করতে উৎসাহিত হবে। আবার আমাদের এটাও বিবেচনা করা উচিত, যারা নাট্যকর্মী বা শিক্ষার্থী রয়েছেন, তারাও যেন নাটক দেখতে পারে। সেক্ষেত্রে ১০০ টাকার টিকেটও থাকা উচিত। ক্যাটাগরি বাড়ালেও কিন্তু একটা সমাধান হয়।”