কিডনি সংক্রান্ত জটিলতায় সুনেত্রা মারা গেছেন।
Published : 14 Jun 2024, 09:34 PM
আশি ও নব্বই দশকে চোখের সৌন্দর্যে সাড়া জাগানো চিত্রনায়িকা সুনেত্রা মারা গেছেন।
গ্লিটজকে এই অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ঢাকাই সিনেমার অভিনেতা জায়েদ খান।
সুনেত্রার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। তার মৃত্যুর খবর শুক্রবার সকালে ফেইসবুকে জানান জায়েদ।
তিনি লেখেন, “এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা, শৈশবের আমার পছন্দের একজন নায়িকা, চোখের প্রেমে পরত যে কেউ, তিনি সুনেত্রা। অনেকদিন বাংলাদেশ ছেড়ে কলকাতা। আমি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন বেশ কয়েকবার ফোনে কথা বলেছিলাম। আজকে হঠাৎ শুনলাম তিনি আর নেই, মৃত্যুবরণ করেছেন।”
জায়েদ লিখেছেন, “নিরবে নিভৃতে চলে গেলেন। এভাবেই হারিয়ে যায় মানুষ, চলে যায়। আপনি ভালো থাকবেন ওপারে। অনেক চলচ্চিত্র দেখব আর আপনাকে মিস করব।”
জায়েদ খানের ওই ফেইসবুক পোস্টের পর দুপুরে জায়েদ খানের সঙ্গে গ্লিটজের পক্ষ থেকে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি এখন মুম্বাইয়ে আছি। আমাকে অভিনেত্রী সুনেত্রার মৃত্যুর খবরটি তার ভাই জানিয়েছেন। কিডনি সংক্রান্ত জটিলতায় তিনি মারা গেছেন।"
তবে কবে এবং কোথায় এই অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছে জানতে চাইলে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন কেটে দেন জায়েদ খান।
এই নায়িকা গত ২০ থেকে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে কোনো একদিন মারা গেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে।
সুনেত্রা অভিনীত ‘পালকি’ সিনেমার পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গ্লিটজকে বলেন, “সুনেত্রার সঙ্গে আমার বহুদিন কোনো যোগাযোগ নেই। তার মৃত্যুর খবর আমিতো জানি না।”
ঢাকাই সিনেমার প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরুও একই কথা বলেন।
“আমরা কিছু জানি না। আমাদের সঙ্গে উনার যোগাযোগ ছিল না,” বলেন তিনি।
সুনেত্রার জনপ্রিয় সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ‘বোনের মতো বোন’, ‘যোগাযোগ’, ‘ভুল বিচার’, ‘সাজানো বাগান’, ‘রাজামিস্ত্রি’, ‘ঘর ভাঙ্গা ঘর’, ‘কুঁচবরণ কন্যা মেঘবরণ কেশ’, ‘শুকতারা’, ‘সুখের স্বপ্ন’, ‘রাজা জনি’, ‘বাদশা ভাই’, ‘ছোবল’, ‘ভাই আমার ভাই’, ‘দুঃখিনী মা’, ‘বন্ধু আমার’, ‘বিধান’, ‘নাচে নাগিন’, ‘সর্পরাণী’, ‘বিক্রম’, ‘উসিলা’, ‘লায়লা আমার লায়লা’, ‘শিমুল পারুল’, ‘ভাবীর সংসার’, ‘আমার সংসার’, ‘ধনরত্ন’, ‘নির্দয়’, ‘উচিত শিক্ষা’, ‘ঘরের সুখ’, ‘সাধনা’ ও ‘আলাল দুলাল’।
সুনেত্রার জন্ম কলকাতায়, ১৯৭০ সালে। তার পুরো নাম রীনা সুনেত্রা কুমার। কলকাতায় থিয়েটারের মঞ্চ দিয়ে তার অভিনয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল।
সুনেত্রা ভারত ও বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তানের দুইটি সিনেমা এবং টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন। তাকে ঢাকাই সিনেমায় নিয়ে আসেন বাংলাদেশের পরিচালক মমতাজ আলী।
বাংলাদেশের সুনেত্রার প্রথম সিনেমা 'উসিলা'; ১৯৮৫ সালের ওই সিনেমায় সুনেত্রার নায়ক ছিলেন সে সময়ের জনপ্রিয় নায়ক জাফর ইকবাল। তবে সুনেত্রার দর্শকপ্রিয়তা তৈরি হয় ১৯৯০ সালে দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘পালকি’ সিনেমা দিয়ে।