সম্প্রতি এক প্রজ্ঞাপনে বিগত সরকারের দেওয়া যে ছয়টি এসআরও (করছাড়) বাতিল হয়েছে, তাতে সুরের ধারার নামও আছে।
Published : 12 Jan 2025, 08:14 PM
রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার 'সুরের ধারা'র জমির ইজারা বাতিলের পর এবার প্রতিষ্ঠানটির প্রশিক্ষণ থেকে আসা আয়ে কর বসিয়েছে সরকার।
'সুরের ধারা' ২০১৩ সাল থেকে ‘উন্নয়নের জন্য সংগীত’ শীর্ষক সামাজিক ও সংগীতের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এর অংশ হিসেবে সংগীত, নাট্যকলা, আবৃত্তি, নৃত্য ও ছড়াগানের প্রশিক্ষণ ফি বাবদ যে আয় হত, তাতে কর অব্যাহতি পেত তারা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি এক প্রজ্ঞাপনে বিগত সরকারের দেওয়া যে ছয়টি এসআরও (করছাড়) বাতিল করেছে, তাতে সুরের ধারার নামও আছে। অর্থ্যাৎ এখন থেকে প্রশিক্ষণ ফি বাবদ আয়ের ওপর তাদেরকে কর দিতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার তিন মাসের মাথায় গত ৭ নভেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে 'সুরের ধারা'র জমির ইজারা বাতিল করা হয়।
এতে বলা হয়, রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার রামচন্দ্রপুর মৌজায় দশমিক ৫১ একরের ওই জমি আরএস রেকর্ডে 'খাল' শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ কারণে ওই জমির দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত বাতিল করা হল।
জমিটির দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত ছিল সুরের ধারার চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষ রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার নামে, যিনি ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন।
১৯৫৭ সালের ১৩ জানুয়ারি রংপুর জেলায় জন্ম নেওয়া বন্যা প্রথমে ছায়ানট এবং পরে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। সেখানে শান্তিদেব ঘোষ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেন ও আশীষ বন্দ্যোপাধায়ের মত সংগীতজ্ঞদের সান্নিধ্যে আসেন তিনি। রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে কয়েকটি বইও তিনি লিখেছেন।
সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৬ সালে বন্যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার পান। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ‘বঙ্গভূষণ’, ফিরোজা বেগম স্মৃতি স্বর্ণপদকসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এ শিল্পী।
মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকার রামচন্দ্রপুর খালের দখলকৃত জমি উদ্ধারে গত জুনের শেষদিকে উচ্ছেদ অভিযান চালায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এনবিআর কর্মকর্তার ছেলের ছাগলকাণ্ডে আলোচিত সাদিক অ্যাগ্রোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা সে সময় উচ্ছেদ করা হয়।
কিন্তু সে সময় খালের জমিতে গড়ে তোলা ‘সুরের ধারা’র স্থাপনা উচ্ছেদ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে সে সময় সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও ছাপা হয়।