বৃহস্পতিবার ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পেয়েছে ‘একটি সূতার জবানবন্দী’ সিনেমা।
Published : 24 Apr 2025, 05:37 PM
সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনা সিনেমায় তুলে এনেছেন পরিচালক কামার আহমাদ সাইমন।
ঘটনার এক যুগ পর বৃহস্পতিবার ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পেয়েছে তার ‘একটি সূতার জবানবন্দী’, যার ইংরেজি নাম ‘টেস্টিমনি অব আ থ্রেড’।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পরিচালক সাইমন বলেন, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনা অন্য সবার মত তাকেও বেশ মানসিক পীড়া দিয়েছিল। তারপর ২০১৫ সালে নির্মাণ করেন ‘একটি সূতার জবানবন্দী’। তা এতদিনপর প্রকাশ্যে এল।
নির্মাতার ভাষ্য, একজন নাগরিকের দায় থেকেই সিনেমাটি বানিয়েছেন তিনি।
“আকিরা কুরোসাওয়ার ‘রাশোমনের’ অনুপ্রেরণায় ৫২ মিনিটের একটি সিনেমা এটি। এখানে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে চারটি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। যেখানে বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন পোশাকশিল্পের নেত্রী নাজমা আক্তার, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি রুবানা হক, চিত্রশিল্পী দিলারা বেগম জলি, অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক এম এম আকাশ।”
‘একটি সূতার জবানবন্দী’ স্ক্রিপ্টের জন্য ২০১৩ সালে ‘দ্য এশিয়ান পিচ’ পুরস্কার পেয়েছিলেন কামার আহমাদ সাইমন। ২০১৫ সালে নির্মাণের পর ২০১৬ সালে হয় এর প্রথম প্রদর্শনী।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ পর তথ্যচিত্রটি চরকিতে মুক্তি পেয়েছে এবং বিনা খরচেই দেখা যাচ্ছে।
নির্মাণের ১০ বছর পর তথ্যচিত্রটি মুক্তি দেওয়া হচ্ছে কেন জানতে চাইলে নির্মাতা বলেন, “‘একটি সূতার জবানবন্দী’ খুবই ডিমান্ডিং সিনেমা, সম্ভবত সময়ের আগেই বানানো। আমাদের প্রচলিত চলচ্চিত্রচর্চার সঙ্গে এই সিনেমাগুলার কোনো দেনা-পাওনা নেই।
“এতবছর পর মুক্তি দেওয়ার কারণ হল ‘একটি সূতার জবানবন্দী’ সিনেমার প্রশ্নগুলা এখন খুবই প্রাসঙ্গিক, তর্কগুলা জারি রাখা জরুরি। তাই এখন জনপরিসরে মুক্তির চিন্তা করেছি।”
ওটিটিতে সিনেমা মুক্তি নিয়ে সাইমন বলেন, “দেশে-বিদেশে বাংলাভাষী দর্শকের কাছে পৌঁছানোর এর চেয়ে ভালো উপায় আর নেই। এই মুহূর্তে চারপাশে যে রকম রগরগে সিনেমার জয়জয়কার চলছে, তাতে মনে হয় দর্শকদের প্রতি খুব একটা সুবিচার করা হচ্ছে না। আবার সামনেই যেহেতু আমার ‘অন্যদিন’ সিনেমাটি আসছে, সেই বিচারে ‘একটি সূতার জবানবন্দী”র মত সিনেমা দর্শক কীভাবে নেয়, সেটাও দেখার ইচ্ছা।”
কামার আহমাদ সাইমনের রচনা ও পরিচালনায় ‘মনোলগ কোলাজ’টি প্রযোজনা করেছেন সারা আফরীন।
সূচনা প্রযোজিত এই সিনেমাটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে এশিয়ার অন্যতম চার টেলিভিশন– জাপানের এনএইচকে, কোরিয়ার কেবিএস, তাইওয়ানের পিটিএস ও সিঙ্গাপুরের মিডিয়াকর্প।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ১০ তলা রানা প্লাজা ভবন ধসে পড়ে। ওই ভবনে থাকা কয়েকটি পোশাক কারখানার ৫ হাজারের মত শ্রমিক তার নিচে চাপা পড়েন।
কয়েকদিনের উদ্ধার তৎপরতায় ১ হাজার ১৩৬ জনের লাশ তুলে আনা হয়। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ২ হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তার মধ্যে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক আহত ও পঙ্গু হন।