দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী মনোনীত করবেন শেখ মোহাম্মদ।
Published : 24 Apr 2025, 08:36 PM
বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানি।
বৃহস্পতিবার দোহায় কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আশ্বাস দেন বলে বাসসের খবরে বলা হয়েছে।
বৈঠকে কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে তিনি একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে মনোনীত করবেন।
চলমান সংস্কার ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে আরও শক্তিশালীভাবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আস্থা প্রকাশ করেন শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানি।
তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, “আমরা আপনার অব্যাহত নেতৃত্বের ওপর আস্থা রাখি।”
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কূটনৈতিক, আর্থিক ও বিনিয়োগ খাতে কাতারের পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করেন।
এর মধ্যে রয়েছে- দেশের প্রায় ১৮ কোটি মানুষ, বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য নতুন সুযোগ এবং একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ সৃষ্টি করা।
অধ্যাপক ইউনূস কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, “আমাদের তরুণদের স্বপ্নের দেশ গড়তে আপনাদের সহায়তা প্রয়োজন।”
শেখ মোহাম্মদ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য কাতারে একটি কারিগরি দল পাঠানোর আহ্বান জানান।
বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়। রোহিঙ্গারা যেন মর্যাদার সঙ্গে দেশে ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার আহ্বান জানান।
আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ আয়োজনে সহায়তা করার জন্য কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান মুহাম্মদ ইউনূস।
১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোরালো করার আহ্বান জানান শেখ মোহাম্মদ। তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি এবং সমস্যার টেকসই সমাধানে কাতারের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
দুই নেতা গাজার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন। অধ্যাপক ইউনূস দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গাজার দুর্দশার বিষয়ে বিশ্বের বেশির ভাগ অংশ এখনো নীরব।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অনেক চ্যালেঞ্জ থাকার পরও গাজা সংকট নিয়ে সংবাদ প্রচারের জন্য কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরাকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের নারী ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণ এবং সুযোগ-সুবিধা দিতে কাতারের সহায়তা চান।
তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শেখ মোহাম্মদ এ অনুরোধ গ্রহণ করেন।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।