জসিমের এই ছবিটি সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন তার ছেলে গিটারিস্ট, ড্রামার ও সুরকার এ কে রাহুল।
Published : 05 Jun 2024, 09:33 AM
গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে হাত, গায়ে বোতামখোলা শার্ট, চোখ রোদচশমা আর চুলের চিরচেনা স্টাইলে নতুন ছবিতে হাজির হয়েছেন ঢাকাই সিনেমার প্রয়াত নায়ক জসিম।
ছবিটি দেখেই বোঝা যায়, এটি তৈরি হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায়। তার ওই ছবি সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন ছেলে এ কে রাহুল, যিনি একজন গিটারিস্ট, ড্রামার ও সুরকার।
ছবি পোস্ট করে রাহুল বলেছেন, ‘দারুণ হয়েছে’।
এআই প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে জসিমের ছবিটি বানিয়েছেন আবদুর রউফ নামের এক ডিজাইনার। তিনি ওই ছবি প্রথমে শুক্রবার সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। তারপর সেটি রাহুলের নজরে এলে তিনি শেয়ার করেন ফেইসবুকে নিজের ওয়ালে।
জসিম ছিলেন এমন একজন নায়ক, যার প্রত্যাবর্তন ঘটেছিল খলনায়ক থেকে। ১৯৫০ সালের ১৪ অগাস্ট ঢাকার নবাবগঞ্জের বক্সনগর গ্রামে জন্ম জসিমের। তার পুরো নাম আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছিলেন তিনি।
‘দেবর’ সিনেমা দিয়ে ঢাকার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে জসিমের। শুরুতে ছিলেন খলনায়ক, প্রায় ৭০টি সিনেমায় ওই ভূমিকায় ছিলেন। পরে নায়ক হয়ে করেন আরও শতাধিক সিনেমা।
১৯৭৩ সালে জহিরুল হকের (প্রয়াত) ‘রংবাজ’ সিনেমায় সবার নজরে আসেন খলনায়ক জসিম। এ সিনেমার অ্যাকশন দৃশ্যগুলো ছিল তার নিজের সাজানো। নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা ‘জ্যাম্বস ফাইটিং গ্রুপ’ এর সদস্যদের নিয়ে সব অ্যাকশন দৃশ্য উপহার দেন তিনি।
জসিমের জনপ্রিয়তার শুরু দেওয়ান নজরুল পরিচালিত ‘দোস্ত দুশমন’ চলচ্চিত্রে। ভারতের শোলের বাংলাদেশি সংস্করণে খলনায়ক হিসেবে তার অভিনয় সবার প্রশংসা কুড়ায়। নায়ক হিসেবে জসিম প্রথম হাজির হন সুভাষ দত্তের ‘সবুজ সাথী’ সিনেমায়।
জসিম প্রথম বিয়ে করেন চিত্রনায়িকা সুচরিতাকে; তবে তাদের বিয়ে টেকেনি। নানা অভিযোগও তখন এসেছিল জসিমের বিরুদ্ধে। এরপর তিনি বিয়ে করেন আরেক নায়িকা নাসরিনকে।
নাসরিন বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা ‘মুখ ও মুখোশ’ এর নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্তের মেয়ে। জাসিম ও নাসরিনের তিন ছেলে সামি, রাতুল ও রাহুল।
জসিমের উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘তুফান’, ‘জবাব’, ‘নাগ নাগিনী’, ‘বদলা’, ‘বারুদ’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘লালু মাস্তান’, ‘নবাবজাদা’, ‘অভিযান’, ‘কালিয়া’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘গরিবের ওস্তাদ’, ‘ভাইবোন’, ‘মেয়েরাও মানুষ’, ‘পরিবার’, ‘রাজা বাবু’, ‘বুকের ধন’, ‘স্বামী কেন আসামী’, ‘লাল গোলাপ’, ‘দাগী’, ‘টাইগার’, ‘হাবিলদার’, ‘ভালোবাসার ঘর’ ইত্যাদি।
১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মারা যান জসিম।
জসিমই একমাত্র নায়ক, যার নামে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার (বিএফডিসি) একটি ফ্লোরের নামকরণ করা হয়েছে।
পুরনো খবর