দেশে দৈনিক প্রায় ২ হাজার ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। অথচ দৈনিক চাহিদা প্রায় ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।
Published : 25 Feb 2024, 01:56 PM
দেশে চাহিদার বিপরীত দৈনিক প্রায় ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে বলে সংসদে তথ্য দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেছেন, বর্তমান দেশে দৈনিক প্রায় ২ হাজার ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। অথচ দৈনিক চাহিদা প্রায় ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।
চাহিদার বিপরীতে দেশে উৎপাদিত গ্যাসের সাথে দৈনিক প্রায় ৮০০-৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট সমতুল্য আমদানিকৃত এলএনজি জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে গ্যাসের ঘাটতি থাকছে প্রায় ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।
রোববার সকালে সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান নসরুল হামিদ। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়।
বিদ্যমান ঘাটতি এবং ভবিষ্যতে গ্যাসের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি বিভিন্ন ধরনের কূপ খনন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, যার সফল বাস্তবায়নে গড়ে দৈনিক ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা সম্ভব হবে।
“তার মধ্যে ১০টি কূপের খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে, যার মাধ্যমে দৈনিক ১১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন নিশ্চিত করা হয়েছে এবং দৈনিক ৩৩ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে।”
তিনি বলেন, বিদ্যমান দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মধ্যে একটির সক্ষমতা সম্প্রতি দৈনিক ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধির ফলে বর্তমানে এলএনজি সরবরাহের মোট সক্ষমতা দৈনিক ১১০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে।
দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর গ্যাস অনুসন্ধান, উৎপাদন, ভবিষ্যতে গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ‘আনকনভানশনাল’ রিসোর্স থেকে গ্যাস উত্তোলন, সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান, এলএনজি আমদানি ও পাইপ লাইনে গ্যাস আমদানির বিষয়গুলো বিবেচনা করে ২০৪০-৪১ অর্থবছর পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি গ্যাস উৎপাদন প্রক্ষেপণ করা হয়েছে।
প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০৩০-৩১ অর্থবছরে দৈনিক ৪ হাজার ৬০৮ মিলিয়ন ঘনফুট ও ২০৪০-৪১ অর্থবছরে দৈনিক ৫ হাজার ২৪৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী।
এম আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিপিসি পরিশোধিত জ্বালানি তেলের মোট আমদানির পরিমাণের অর্ধেক জিটুজি এবং বাকি অর্ধেক আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আমদানি করে থাকে।
নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমানে বিপিসি ছয়টি দেশের (ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়া) রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জি টু জি ভিত্তিতে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করছে।
ভারত থেকে দৈনিক ২, ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, দেশে ২৩ হাজার ১৫৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৪১টি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। ভারত থেকে ২ হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১১ হাজার ৩০৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৮টি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন এবং দরপত্র প্রক্রিয়াধীনের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের বর্তমান ইউনিটের দ্বিগুণ ক্ষমতা সম্পন্ন ৩০ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধন ক্ষমতার একটি নতুন রিফাইনারী স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ প্রকল্পটি আগামী ২০২৮-২৯ সাল নাগাদ বাস্তবায়িত হবে।
নিবন্ধন পেয়েছে ২০৮টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত ২০৮টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ১৬৮টি দৈনিক পত্রিকার অনলাইন নিউজ পোর্টালকে নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে বলে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের পক্ষে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে তিনি এ তথ্য জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের বিষয়টি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে আরো অনলাইন পোর্টালের নিবন্ধন দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, দেশের অনিবন্ধিত কোনো অনলাইন সংবাদপত্রে বা অনলাইনভিত্তিক পোর্টালে দেশ-বিরোধী সংবাদ প্রচার বা মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচারের অভিযোগ পাওয়া গেলে তা বন্ধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সরকার দলীয় এমপি এস এম আতাউল হকের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে ২০১৫-১৬ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত সারাদেশে অসুস্থ, অসচ্ছল ও দুর্ঘটনায় আহত ও মৃত ১৩ হাজার ৭৪৬ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের মাঝে ৪১৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা অনুদান বিতরণ করেছে।