অধ্যাদেশ জারি, বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম ঠিক করতে পারবে সরকারও

সংসদ অধিবেশনের জন্য অপেক্ষা না করে অধ্যাদেশের মাধ্যমে কার্যকর হল আইনের সংশোধন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2022, 01:01 PM
Updated : 1 Dec 2022, 01:01 PM

‘বিশেষ পরিস্থিতিতে’ জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম সরাসরি বাড়ানো কিংবা কমানোর ক্ষমতা সরকারের কাছে আনতে আইন সংশোধন হল রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২ বৃহস্পতিবার জারি করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সংসদ অধিবেশন না থাকলে জরুরি কোনো প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করেন। অধ্যাদেশ জারির পর সংসদের প্রথম বৈঠকে তা উপস্থাপন করা হয়ে থাকে।

আর স্বাভাবিকভাবে আগে সংসদে উপস্থাপন হয়।আইন সভায় পাস পেলে তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে কার্যকর হয়।

আগের আইনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ানোর এই ক্ষমতা ছিল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি)।

এ সংশোধনীর কারণে বিইআরসির পাশাপাশি সরকার ‘বিশেষ পরিস্থিতিতে’ সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দিয়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করতে পারবে।

২০০৩ সালের প্রণীত আইনের ৩৪ ধারায় সংশোধনের পাশাপাশি নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে।

ওই ধারায় বলা হয়েছে, “এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে, জনস্বার্থে, কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালী কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এর উৎপাদন বৃদ্ধি, সঞ্চালন, পরিবহন ও বিপণনের নিমিত্ত দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে বিদ্যুৎ উৎপাদন, এনার্জি সঞ্চালন, মজুতকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করিতে পারবে।”

Also Read: বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বাড়াতে-কমাতে সরকারও পারবে, সংশোধন হচ্ছে আইন

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যে এই আইন সংশোধনের প্রস্তাব সোমবার মন্ত্রিসভা অনুমোদন করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “জটিলতা এড়াতে আইনটিতে সংশোধন আনা হচ্ছে। এখন বিইআরসি এগুলো (দাম সমম্বয়) সব হ্যান্ডেল করে। কিন্তু বিইআরসির কিছু কিছু জায়গায় একটু প্রবলেম হয়, যেমন ৯০ দিন পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত না দিয়ে থাকতে পারে।

“কারণ আইনে বলা আছে বিআরসি ৯০ দিনের মধ্যে এগুলো সব শুনানি নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। অনেক সময় আমাদের ইমিডিয়েট প্রয়োজন আসে, অনেক সময় তারা ঠিকভাবে সমন্বয় করতে পারে না।”

‘বিশেষ পরিস্থিতি’র ব্যাখায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, “একটা ইমার্জেন্সি আসল। আবার অনেক সময় দাম কমে গেল, কিন্তু বিইআরসি ৯০ দিন ধরে দাম কমাবে। সরকার হস্তক্ষেপ করে একটা নোটিফিকেশন দিয়ে দাম কমিয়ে নিয়ে আসতে পারবে। বিইআরসি কাজগুলো করবে, কিন্তু স্পেশাল যদি কোনো সিনারিও হয়, তখন সরকার হস্তক্ষেপ করে সেই দামের বিষয়টা হ্যান্ডেল করবে।”