গ্রাহক পর্যায়ে পল্লী বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি।
Published : 06 Mar 2014, 06:17 PM
বৃহস্পতিবার সকালে কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কার্যালয়ে দাম বৃদ্ধি নিয়ে গণশুনানিতে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ১২ দশমিক ৫৮ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়।
বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাটির এই প্রস্তাব পর্যালোচনা করে বিইআরসির মূল্যায়ন কমিটি ৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধির পক্ষে মত দেয়।
শুনানিতে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের উপদেষ্টা শামসুল আলম, কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন।
বিইআরসি চেয়ারম্যান এ আর খান, সদস্য সেলিম মাহমুদ, প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন ও মাকসুদুল হক শুনানি গ্রহণ করছেন।
বাম সংগঠনগুলোর বিরোধিতার মধ্যেই মঙ্গলবার বিইআরসি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে শুনানি শুরু করে। বৃহস্পতিবার ছিল শুনানির শেষ দিন।
প্রথম দিন রাষ্ট্রায়ত্ত বিতরণ সংস্থা বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) বিদ্যুতের দাম গড়ে ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) গড়ে ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিলে বিইআরসির মূল্যায়ন কমিটি যথাক্রমে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ ও ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ বাড়ানোর পক্ষে মত দেয়।
দ্বিতীয় দিন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) বিদ্যুতের দাম গড়ে ৬ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ক্ষেত্রে ২ দশমিক ০১ শতাংশ বাড়ানো যেতে পারে বলে মত দেয় বিইআরসি মূল্যায়ন কমিটি।
আওয়ামী লীগের বর্তমান ও গত সরকারের আমলে খুচরা এবং পাইকারি পর্যায়ে ১১ দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০১২ সালে সেপ্টেম্বরে খুচরা বিদ্যুতের দাম ১৫ শতাংশ এবং পাইকারির দাম ১৭ শতাংশ বাড়ানো হয়।
বিইআরসির এক সদস্য মঙ্গলবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সাংবাদিককে বলেন, “দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দিতে আমরা দেরি করব না। ১০ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে। এবার গড়ে ৬ থেকে ১০ শতাংশ দাম বাড়তে পারে।”
নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চাসহ কয়েকটি বামদলের নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিইআরসি কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ করেন।
শুনানিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল করে বিদ্যুতের যে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে তা জনগণের কাঁধে চাপানো হচ্ছে।
গাইবান্ধার স্কুল শিক্ষক শাহ মুসিকুর রহমান পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিভিন্ন হয়রানির চিত্র তুলে ধরেন।
এ সময় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈন উদ্দিন অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “আমরা অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতিমধ্যে চার জন জিএম ও ২৫ জন এজিএমকে বিভিন্ন অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে।”