বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেয়া হচ্ছে।
Published : 10 Apr 2013, 01:02 PM
এজন্য সেনাপ্রধানের সঙ্গে আগামী ১৫ এপ্রিল বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মেঘনা ও মেঘনা গোমতী সেতু সংস্কার কাজ শেষ হওয়া উপলক্ষে বুধবার মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি একথা জানান।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এই দুটি সেতু সংস্কারে সেনাবাহিনী সহায়তা নেয়া হয়। ওই অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়াও ছিলেন।
দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে টানাপোড়েনে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল অর্থায়নকারী সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক বাদ পড়ার পর নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয় সরকার।
এরপর এই বছরের শুরুতে হাতিরঝিল প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সেনাবাহিনীকে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান। হাতিরঝিল প্রকল্পও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হয়।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল আবদুল মুহিত মঙ্গলবার বলেছেন, জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতুর মূল কাঠামো নির্মাণের দরপত্র ডাকা হবে।
যোগাযোগমন্ত্রী পদ্মা সেতু নির্মাণের সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করবেন জানিয়ে তাদের ইতোপূর্বকার কাজের প্রশংসাও করেন।
“সেনাবাহিনীকে বনানী ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ দিয়েছিলাম। তারা এক মাস আগেই কাজ সম্পন্ন করে দেখিয়ে দিয়েছে। চট্টগ্রাম মেরিন ড্রাইভ, বান্দরবান, কক্সবাজারে ১৩টি প্রকল্পে তারা কাজ করছে।”
সেনাপ্রধান ইকবাল করিম বলেন, সরকারের দেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে সেনাবাহিনী।
অনুষ্ঠানে যোগাযোগমন্ত্রী জানান, আগামী অক্টোবরের শুরুতেই দ্বিতীয় মেঘনা, দ্বিতীয় কাচপুর ও দ্বিতীয় গোমতী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এ বিষয়ে জাইকার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।
মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতুর সংস্কার কাজের জন্য তিন পর্বে ১৬ দিন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়, সেজন্য দেশবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।
দুই দশক আগে নির্মিত এই সেতু দুটি সংস্কারে ৪৩৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সাঈদ মো. মাসুদ জানান, সেতু দুটির ওপর দিয়ে দৈনিক গড়ে সর্বোচ্চ ১১ হাজার যান চলাচলের কথা কথা থাকলেও চলছে ২০ হাজারের বেশি।
দীর্ঘ দিন অতিরিক্ত ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সেতু দুটির এক্সপানসন জয়েন্ট ও হিঞ্জ বিয়ারিংগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেতু দুটিতে মাত্রাতিরিক্তি কম্পন অনুভূত হচ্ছিল বলে তিনি জানান।
ব্রিগেডিয়ার সাঈদ বলেন, এছাড়া মেঘনা নদীতে বড় জাহাজ চলাচলের কারণে মেঘনা সেতুর মূল ভিত্তির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে,যা সেতুটির জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।
যোগাযোগমন্ত্রী জানান, বর্ষার আগেই দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়ক ও সড়কের সব গর্ত ভরাট ও ফাটল মেরামতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
“আমি শান্তি দিতে পারব না, শান্তি সোনার হরিণ। তবে দুর্ভোগ কমিয়ে জনগণকে স্বস্তি দিতে চাই,” বলেন তিনি।