চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৮৪ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ৩৬ দশমিক ৮০ শতাংশ।
Published : 29 Mar 2022, 12:49 AM
চলতি অর্থবছরের এ ব্যয় আগের ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বাস্তবায়নের হার ছিল ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ৭২ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা।
আগের পাঁচ অর্থবছরের মধ্যে চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাস্তবায়নের হার দ্বিতীয় সর্বনিম্ম। কোভিডের প্রভাবে এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে সবচেয়ে কম ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ আট মাসে এডিপি বাস্তবায়নে জড়িত ৫৮টির মধ্যে আটটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ১০ শতাংশও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এরমধ্যে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কাজের অগ্রগতি শুন্য।
এডিপির অগ্রগতি কম হওয়া প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার প্রতিবছর বড় ধরনের এডিপির আকার অনুমোদন দেয়। কিন্তু অর্থবছরের শুরুর দিকে সরকার প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দিতে পারে না। ফলে অর্থছাড় কম হওয়ায় ঠিকাদার বা প্রকল্প কর্তৃপক্ষও প্রকল্পের গতির সেভাবে বাড়াতে চান না। ফলে অর্থবছরের প্রথম দিকে এডিপি বাস্তবায়নে গতি পায় না।
“অর্থবছরের প্রথম দিক থেকেই এডিপি বাস্তবায়নে গতি কম হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের অর্থছাড় করতে না পারা।“
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য সরকার ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব ১২ হাজার ৯০১ কোটি টাকাসহ মোট ২ লাখ ৩৬ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দেয়।
আইএমইডির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অর্থবছরের আট মাস চলে গেলেও এডিপি বাস্তবায়নে জড়িত বেশি বরাদ্দ পাওয়া ১৫ মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে বেশি ৭১ দশমিক ৩০ শতাংশ বরাদ্দ ব্যয় করতে পেরেছে করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ৩১ শতাংশ বরাদ্দ ব্যয় করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ৪৩ দশমিক ০৩ শতাংশ।
এছাড়াও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ৪২ দশমিক ৫৭ শতাংশ, রেলপথ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ণ করেছে প্রায় ৩৯ শতাংশ, বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় করেছে ৩৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে প্রায় ৩৮ শতাংশ।
আট মাসে বিদ্যুৎ বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে ৩৭ দশমিক ৬০ শতাংশ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ৩৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বাস্তবায়ন করেছে ৩১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। বাকিগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৩০ শতাংশও হয়নি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০ শতাংশের নিচে অর্থ ব্যয় হয়েছে এমন সংস্থা ও বিভাগের মধ্যে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২ দশমিক ১৬ শতাংশ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৬ দশমিক ০৬ শতাংশ, আইএমইডি ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ, অর্থ বিভাগ ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ বরাদ্দ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে।