৩৫% বেশি রেমিটেন্স এসেছে সাত মাসে

চলতি অর্থবছরের সাত মাসে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৫ শতাংশ বেশি।

আবদুর রহিম হারমাছি প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2021, 04:25 PM
Updated : 1 Feb 2021, 04:25 PM

গত অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ১১ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার রেমিটেন্সের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, ২০২১ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৯৬ কোটি ২৬ লাখ ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছে।

এই অংক গত বছরের জানুয়ারি মাসের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ১৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল।

২০১৯-২০ অর্থবছরের পুরো সময়ে (জুলাই-জুন) ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল। সে হিসাবে দেখা যাচ্ছে, গত অর্থবছরের ৮২ শতাংশ রেমিটেন্স সাত মাসেই চলে এসেছে।

২০২০ সালের নয় মাসই গেছে মহামারীর সঙ্কটের মধ্যে, এখনও সে বিপদ কাটেনি। পুরো বিশ্বের মত বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও এ সঙ্কটে হোঁচট খেতে হয়েছে। তবে এর মধ্যেও বাংলাদের রেমিটেন্স প্রবাহ কমেনি; উল্টো বেড়েছে।

বিশ্ব ব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছিল, কোভিড-১৯ মহামারীর ধাক্কায় ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ার রেমিটেন্স ২২ শতাংশ কমবে; বাংলাদেশে কমবে ২০ শতাংশ। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশে রেমিটেন্স বেড়েছে ১৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের সাত মাসের মধ্যে পাঁচ মাসেই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স দেশে এসেছে। ২০২০ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ২০৫ কোটি ডলার।

মহামারীর মধ্যেই অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে, যা এক মাসের হিসাবে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।

২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা। ওই অঙ্ক ছিল আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি।

ফাইল ছবি

দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা এক কোটির বেশি বাংলাদেশির পাঠানো এই অর্থ। দেশের জিডিপিতে সবমিলিয়ে রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মত।

রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে গত অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।

প্রবাসীদের পাঠানো এই অর্থের উপর ভর করে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন আবার ৪৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করতে চলেছে।

গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪২ বিলিরয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছিল।

রেমিটেন্স বাড়ায় তিন সপ্তাহের ব্যবধানে সেই রিজার্ভ বেড়ে আবার ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই করছে। সোমবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪২ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।

এই রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার হিসেবে সাড়ে দশ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।

বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ-এই নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যে সব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।