“মাতারবাড়িকে কেন্দ্র করে একটা অর্থনৈতিক জোন তৈরি করা হচ্ছে এর উদ্দেশ্য।”
Published : 17 Apr 2024, 10:57 PM
কক্সবাজারের মহেশখালীতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের হাব গঠনে একটি কর্তৃপক্ষ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে সরকার।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০২৪ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদের সচিব মাহবুব হোসেন সচিবালয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন সাংবাদিকদের সামনে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পক্ষ থেকে মুখ্য সচিব মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০২৪ বৈঠকে উত্থাপন করেন।
“এ আইন পাস হলে মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, এমআইডিএ বা মিডা গঠন করা হবে। মন্ত্রিসভা থেকে ছোটখাটো কিছু অবজারভেশন দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তারা পরিবর্তন করে কেবিনেটে নিয়ে আসবে।”
মিডার প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মহেশখালী-মাতারবাড়ি সমন্বিত উন্নয়নে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
“২০১৪ সালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরকালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ ইনিশিয়েটিভ’। এর আওতায় জাপান সরকার মাতারবাড়িতে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। মাতারবাড়িকে কেন্দ্র করে একটা অর্থনৈতিক জোন তৈরি করা হচ্ছে এর উদ্দেশ্য।
“গভীর সমুদ্র বন্দর থেকে শুরু করে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে উন্নয়ন কাজগুলো পৃথক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হচ্ছে। এখন সেগুলোকে সমন্বিত রূপ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় একটা কর্তৃপক্ষ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
সচিব বলেন, “এ আইনের আওতায় যে কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হবে, সেখানে একটা গভর্নিং বডি থাকবে। এই গভর্নিং বডির চেয়ারপার্সন থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। এখানে একটি বোর্ড থাকবে, যাতে অর্থমন্ত্রীসহ কয়েকজন মন্ত্রী থাকবেন। মোট ১৭ সদস্যের হবে এই বোর্ড। এর বাইরেও একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থাকবেন।”
মহেশখালীতে ৫৫ হাজার ৯৬৮ একর জমি নিয়ে একটি বিজনেস হাব গঠন করার পরিকল্পনার কথাও বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, “এই অথরিটির মূল কাজ হবে নির্ধারিত এলাকায় মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করা। মূল লক্ষ্য থাকবে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা এবং দেশের আমদানি রপ্তানি কাজকে সুবিধা দেওয়া। যে লজিস্টিক নীতিমালা করা হচ্ছে, এর সঙ্গে এই কর্তৃপক্ষের কাজের সংযোগ আছে।
“আমদানি রপ্তানির লিড টাইম কমিয়ে আনাও এর একটা উদ্দেশ্য। এর আরেকটি দায়িত্ব হবে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী সেখানে যেন পরিবেশ সংরক্ষিত থাকে। সেখানকার এখনকার অর্থনৈতিক কার্যক্রম লবণ চাষ, চিংড়ি চাষ যেন অব্যাহত থাকে, সেই সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। এ আইনের আওতায় বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা হবে। যারা বিনিয়োগ করতে চান তাদের সহায়তার বিষয়ে একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন।”
মহেশখালী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় হবে কক্সবাজারে, ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিস থাকবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২৪ এও নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “সামরিক শাসনামলে যেসব আইন তৈরি করা হয়েছে সেগুলো বাতিলের জন্য নির্দেশনা রয়েছে আদালতের। সেই প্রেক্ষিতে মূল আইনটির বাংলা করা হয়েছে। মূল আইন ঠিকই আছে।
“সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা যেসব সুযোগ সুবিধা পান। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির সমান মর্যাদা ও বেতন ভাতা পাবেন। অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা হাই কোর্ট বিভাগের অন্যান্য বিচারপতিদের মত বেতন ভাতা পাবেন। এটাকে বাংলা করা হয়েছে, কোনো চেইঞ্জ নেই।”