প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন সাবেক এই ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’।
Published : 21 Apr 2025, 07:01 PM
প্রতারণার মামলায় কারাগারে থাকা সাবেক ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ মেঘনা আলমের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এ বিষয়ে রোববার বিএফআইইউ এর পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে একটি ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।
মডেল ও মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেঘনা আলম ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর মিস আর্থ বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। গত ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটকের আগে তিনি ফেইসবুক লাইভে এসে বাসার ‘দরজা ভেঙে পুলিশ পরিচয়ধারীরা’ ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন। তাকে আটক করার পরপরই লাইভটি বন্ধ হয়ে যায়।
পরদিন ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করা হলে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনাকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন বিচারক।
মডেল মেঘনাকে আটকের প্রক্রিয়া নিয়ে সমালোচনার মধ্যে ১২ এপ্রিল ডিএমপির ডিবি প্রধান রেজাউল করিম মল্লিককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
বিশেষ ক্ষমতা আইনে মডেল মেঘনা আলমের আটকাদেশকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং তাকে মুক্তির কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে রুল জারি করে হাই কোর্ট।
তাকে যে প্রক্রিয়ায় বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে তা অসাংবিধানিক ও মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থি কেন নয়–তাও রুলে জানতে চাওয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই ধানমন্ডি থানায় ‘হানি ট্র্যাপিংয়ের’ মামলা দায়ের করা হয় মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে। সানজানা ইন্টারন্যাশনাল নামের এক জনশক্তি রপ্তানিকারক কোম্পানির মালিক দেওয়ান সমিরকেও সেখানে আসামি করা হয়।
গত ১৭ এপ্রিল তাদের আদালতে হাজির করে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী সেই শুনানিতে বলেন, “এই আসামিরা অভিনব কৌশল অবলম্বন করে বিদেশি রাষ্ট্রদূতসহ অ্যাম্বাসিগুলোতে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের হানি ট্র্যাপে ফেলে বিপুল অর্থ বাগিয়ে নেওয়ার জন্য চক্র দাঁড় করিয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতারণা করে আসছেন। সবশেষ সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। এবং তার কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।”
অন্যদিকে মেঘনা আলম আদালতের অনুমতি নিয়ে শুনানিতে বলেন, “আমাকে বিনা বিচারে জেলে পাঠানো হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে কোনো আইনজীবী পাবেন না। বিষয়টি হল রাষ্ট্রদূত ঈসার সাথে আমার একমাত্র সম্পর্ক, আর কারো সাথে না।”
তিনি দাবি করেন, “সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসার সাথে আমার বিয়ে হয়। ঈসা অভিযোগ করেন, আমি নাকি তার বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেছি। এটা মোটেও সত্য না। এ বিষয়ে আমি ঈসার সাথে কথা বলি। তাকে এসব তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলি। এসব বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি শফিকুরের সাথে কথা বলি। এরপরেই পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে।”