করোনাভাইরাস মহামারীর ক্ষতি সামলে উঠতে রপ্তানিকারকদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচ হাজার কোটি টাকার যে প্রাকজাহাজীকরণ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল (প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিম) করেছিল, সেই তহবিল থেকে ব্যাংকগুলোর ঋণ পাওয়ার শর্ত শিথিল করা হয়েছে।
Published : 23 Jul 2020, 01:11 AM
বুধবার এক সার্কুলারের মাধ্যমে তহবিলের নীতিমালার কয়েকটি শর্ত সংশোধন করে ব্যাংকগুলোকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
গত ১৩ এপ্রিল এই তহবিল গঠন করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে বলা হয়েছিল, কোনো রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের রপ্তানিমূল্যের প্রত্যাবাসন (গাইডলাইন ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশনস-জেএফইটি এর নির্ধারিত সময় পর্যন্ত) ওভারডিউ থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অনুকূলে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দেওয়া হবে না।
বুধবারের সার্কুলারে তা সংশোধন করে বলা হয়েছে, কোনো রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের রপ্তানিমূল্যের প্রত্যাবাসন ওভারডিউ থাকলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহক পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের সুবিধা পাবে না।
এই তহবিলের নীতিমালা অনুযায়ী, গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণে পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণের ক্ষেত্রে শর্ত পরিপালনে ব্যাংকগুলো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিল বলে এই সংশোধনী আনা হয়েছে।
ব্যাংকগুলোকে এই সুবিধাসহ আরও কয়েকটি সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
নতুন সার্কুলারে বলা হয়েছে, একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ এক বছরের বেশি ঋণ সুবিধা দিতে পারবে না ব্যাংক। একজন গ্রাহককে একাধিকবার এই ঋণ দেওয়া যাবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের মেয়াদ যাই হোক না কেন বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বোচ্চ ১৮০ দিন (যা আগে ১২০ দিন ছিল) অংশগ্রহণকারী ব্যাংককে পুনঃঅর্থায়ন করবে, যা মেয়াদ শেষে সুদসহ এককালীন পরিশোধ করতে হবে।
তহবিলের নীতিমালায় পুনঃঅর্থায়ন বাবদ ব্যাংকের গৃহীত ঋণ অংশগ্রহণকারী ব্যাংকের চলতি হিসাবে প্রদানের তারিখ হতে ১২০ দিন পর সুদসহ এককালীন কর্তন করার কথা ছিল।
বুধবারের সার্কুলারে এই সময় দুই মাস (৬০ দিন) বাড়িয়ে ১৮০ দিন করা হয়েছে।
নীতিমালার অন্যান্য শর্ত অপরিবর্তিত থাকবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ তহবিলের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৩ শতাংশ সুদ হারে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। আর গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ।
করোনাভাইরাসের অভিঘাতে অর্থনীতির ক্ষতির মধ্যেও সব খাতের রপ্তানিকারকদের সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ এপ্রিল মোট ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন তারমধ্যে এই পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিলের ঘোষণাও ছিল।
নতুন এই তহবিলের নাম দেওয়া হয়েছে প্রি-শিপমেন্ট রিফাইন্যান্স ক্রেডিট পুনঃ অর্থায়ন স্ক্রিম। তহবিলের পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুরোটাই জোগান দেওয়া হবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে।
স্থানীয়ভাবে উৎপাদিন রপ্তানিমুখী শিল্পে শুধুমাত্র প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট খাতে এ ঋণ বিতরণ করতে হবে।
বাংলাদেশের কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংক এই পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। পুনঃঅর্থায়নকারী ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি অংশগ্রহন চুক্তি করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক তহবিলটি পরিচালনা করবে। স্ক্রিমের মেয়াদ হবে তিন বছর। এই সময়ের মধ্যে তহবিলটি আবর্তনযোগ্য।
যে কোনো খাতের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এই তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবে।