করোনাভাইরাস সঙ্কটের কারণে আড়াই বছরের মধ্যে প্রথমবারের এক মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারের নিচে নেমে আসছে।
Published : 01 May 2020, 05:40 PM
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান জানান, সদ্য সমাপ্ত এপ্রিল মাসের ২৯ দিনে ৯৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছে। বাকি এক দিনের তথ্য এখনও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসেনি। সেটা এলেও সব মিলিয়ে এপ্রিলের রেমিটেন্স ১ বিলিয়ন ডলারের নিচেই থাকবে।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ৮৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তার পর থেকে গত আড়াই বছরে প্রতি মাসেই রেমিটেন্স এসেছে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি। কোনো মাসে সেটা দেড় বিলিয়ন ডলারও হয়েছে।
এক মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল ২০১৮ সালের মে মাসে; প্রায় ১৭৫ কোটি ডলার।
এপ্রিলে যদি ১ বিলিয়ন ডলারও আসে, তবে তা হবে গত বছরেরর এপ্রিলের তুলনায় ৪৪ শতাংশ কম। গত বছর এপ্রিলে ১৪৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছেন। তারা দেশে পরিবারের জন্য যে অর্থ প্রতিবছর পাঠান তা জিডিপির ১২ শতাংশের মত।
করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারী রূপ নেওয়ার পর অনেক প্রবাসী দেশে ফিরে এসেছেন। জানুয়ারি থেকে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত ফিরে এসেছেন ৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৩০ জন।
বিশ্ব ব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এ বছর সারাবিশ্বে রেমিটেন্স কমবে ২০ শতাংশ। আর বাংলাদেশে কমবে ২২ শতাংশ।
সামনের দিনগুলো নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা ভালো দিক যে এখনও কিছু রেমিটেন্স আসছে। তবে কত দিন এটা আসবে সে বিষয়ে সংশয় আছে।“
গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। তার আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রেমিটেন্স বেড়েছিল আরও বেশি; ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
রিজার্ভ ৩৩.১ বিলিয়ন ডলার
রেমিটেন্সে ধসের পরও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার ফের তিন হাজার ৩০০ কোটি (৩৩ বিলিয়ন) ডলার ছাড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। মূলত আমদানি ব্যয় কমার কারণেই রিজার্ভ এই পর্যায়ে রয়েছে।