পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্র বন্দরের কাছাকাছি চরনিশান বাড়িয়া মৌজায় ১০৫ একর জমিতে একটি আধুনিক জাহাজ নির্মাণ শিল্প স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
Published : 14 Jan 2020, 09:02 PM
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) এই উদ্যোগে যুক্ত রয়েছে নেদারল্যান্ডসের বিখ্যাত জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডামেন গ্রুপ ও সিঙ্গাপুরের উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান জেন্টিয়াম সল্যুশনস।
প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে মঙ্গলবার শিল্প মন্ত্রণালয়ে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ছয় মাসের মধ্যে সমীক্ষা যাচাই শেষ হবে। তবে কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে আরও ছয় মাস সময় পাবে প্রতিষ্ঠানগুলো। এরপরই শুরু হবে জাহাজ নির্মাণের অবকাঠামোসহ অন্যান্য কাজ। সেখানে জাহাজ শিল্পে সংশ্লিষ্ট কাচামাল তৈরির কারখানাও স্থাপন করা হবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নে নেদারল্যান্ডস ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক দুই প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করে বিএসইসির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
এ সময় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্পসচিব আবদুল হালিম, বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডের ডেপুটি হেড অব মিশন জেরোয়েন স্টেগস্সহ শিল্প মন্ত্রণালয়, বিএসইসি এবং চুক্তি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উদীয়মান জাহাজ নির্মাণ শিল্পখাতের বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে শিল্প মন্ত্রণালয় অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজ করছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে নির্মিত জাহাজ ডেনমার্ক, জার্মানি, ফিনল্যান্ড, নিউ জিল্যান্ড, ইকুয়েডর, তানজানিয়া, গাম্বিয়া, দুবাই, উগান্ডা, কেনিয়া, ভারত, পাকিস্তান, মুজাম্বিক ও মালদ্বীপে রপ্তানি হচ্ছে।
বিশ্ব অর্থনৈতিক তথ্য বিশ্লেষণী সংস্থা ‘বিজনেস ওয়্যার’র হিসাব অনুযায়ী, ২০২৬ সাল নাগাদ বিশ্বে জাহাজ কেনা খাতে ৬৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি খরচ হবে। জাহাজ কেনার ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব জাহাজ বিশ্ব চাহিদার শীর্ষে থাকবে। একই সময়ে সমুদ্রগামী ছোট জাহাজ ও ভেসেল শিল্পের বিশ্ব চাহিদা বেড়ে প্রতিবছর ৪০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। বিশ্বের জাহাজের মোট চাহিদার ১ শতাংশ যোগান দিতে পারলেও বাংলাদেশ এ খাত থেকে বছরে কমপক্ষে চার বিলিয়ন ডলার আয় করতে সক্ষম হবে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের লক্ষ্য হচ্ছে জাহাজ নির্মাণের বৈশ্বিক বাজারে নিজেদের অংশীদারিত্ব সৃষ্টি করা। সে ক্ষেত্রে ২০২৬ সালের মধ্যে অন্তত এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের পরিকল্পনা রয়েছে।