গ্রামের পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে সভ্য দেশগুলোর মতো উন্নত নাগরিক সেবা পৌঁছে দিতে সবার সহযোগিতা ও স্থিতিশীল পরিবেশ দরকার বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
Published : 07 Sep 2019, 05:35 PM
তবে চিরদিন ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকার এই কথা বলা হচ্ছে না বলেও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
শনিবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়া নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) আয়োজিত চতুর্থ সাউথ এশিয়া ইকোনমিক নেটওয়ার্ক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রাজধানীর মহাখালী ব্রাক ইন সেন্টারে দুই দিন ব্যাপী এ সম্মেলনশুরু হয়েছে।
মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, “গ্রামে সেবা দেওয়ার ধারণা আগে ছিলনা এই দেশে। গ্রাম আর শহরের মধ্যে একটা বিভাজন ছিল। আগে মনে করা হত ওটা গ্রাম, শহরের বাবুদের সেবা আগে করতে হবে।
“এই ধারণা পাল্টে গেছে।ঔপনিবেশিক শক্তি যাওয়ার পরে স্বাধীনতার পরে এখন সবাইকে নিয়ে সমন্বিতভাবে উন্নয়ন করতে হবে। তার মানে গ্রামের শেষ ব্যক্তি যিনি আছেন তাকেও সঙ্গে নিতে হবে।”
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “তার জন্য প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা এবং একটি স্থিতিশীল পরিবেশ। আমাদের আপনারা ভুল বুঝতে পারেন যে, আমরা হয়তো চিরদিন ক্ষমতায় থাকার জন্য এ কথাটা বলছি। এটা সম্ভব নয়। পাঁচ বছর পর আমরা আপনাদের দরজায় অবশ্যই যাব। তখন আপনারা বিচার করবেন এবং সেই বিচার মানতে আমরা বাধ্য।”
গ্রামে বিদ্যুৎ ছড়িয়ে দেওয়ার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি।
“বিদ্যুৎ শুধু ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেটে হবে এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এতদিন তাই ছিল। কিন্তু আমরা এই ধারণা পাল্টে দিয়েছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই ধারণা ভেঙ্গেছে। আমরা শুধু স্বাধীনতা অর্জন করিনি। আমরা দারিদ্র্য মোকারেবলা করছি। আমরা কূপমণ্ডুকতা ভাঙবার চেষ্টা করছি। আমরা সার্বিকভাবে জাতীয় সংস্কার করছি।
“এর ফলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। মানুষের জন্য জীবন যাত্রার মান যেভাবে প্রয়োজন, পৃথিবীর উন্নত ও সভ্য দেশগুলোতে যা আছে, সেগুলো আমরা গ্রামে নিয়ে যেতে পারব।”
মন্ত্রী সরকারের সফলতা উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, “আমরা আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় ভালো করছি। আমাদের প্রতিবেশিদের সঙ্গেও কোনো সমস্যা নেই। শুধুমাত্র রোহিঙ্গা ছাড়া আমাদের আর তেমন কোনো সমস্যা নেই।”
দাতা সংস্থাগুলোর সহযোগিতার ধরণ উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “দাতাদের কাছে আমরা শুধু অর্থই চাই না। তাদের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে বিনিময়ের আশাও আমরা করি।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ব ব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি মার্সি মিয়াং টেম্বন বলেন, “আমার মনে হয়েছে স্থানীয় সরকারের দুর্বলতা, শিক্ষার দুর্বল অবকাঠামো এবং সবার জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান জানান, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর কার্যকর রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থা এবং সাধারণ মানুষের কাছে নাগরিক সেবা পৌঁছে দিতে দেশগুলোর অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।