শনিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বেসরকারি ব্যাংকটির এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রশংসা করে গভর্নর বলেন, “আপনাদেরকে দেখছি, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কৃষি ঋণ দিতে যাচ্ছেন। এটি সময় উপযোগী ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ।
“আমাদের সকল ব্যাংক এটি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে; সবাই এটি করবে বলে আমি আশা করি। কৃষি ঋণ সরাসরি কৃষকের কাছে বা বেনিফিশিয়ারির কাছে দিবেন আপনারা।”
আল-আরাফাহ ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করার ফলে কৃষকরা কম সুদে ঋণ সুবিধা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন গভর্নর ফজলে কবির।
“কারণ কৃষি ঋণ প্রতি বছর আমরা নির্ধারণ করে দিচ্ছি, কিন্তু অনেক প্রাইভেট কমার্সিয়াল ব্যাংক- বিশেষ করে ফরেন কমার্সিয়াল ব্যাংক কোনো এমএফআই বা এনজিওকে দিচ্ছে। এনজিও বা এমএফআই ঠিকই কৃষকের কাছে ঋণ পৌঁছে দিচ্ছে বা কৃষি কাজে লাগাচ্ছে, কিন্তু সেই ঋণ কিন্তু আর ৯ শতাংশে (সুদ) পৌছে না। সেই ঋণ দ্বিগুণের বেশি চলে যাচ্ছে। কৃষকদের বেশি হারে সুদ দিতে হচ্ছে।”
“আমি দেখছি এই ব্যাংক ভাল করছে। তাদের পর্যাপ্ত মূলধন রয়েছে।খেলাপি ঋণ নন ৫ শতাংশের মত আছে, বিদেশী ব্যাংকগুলোর যেখানে ৭ শতাংশের ওপরে। অন্যান্য ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ১০ দশমিক ৪ শতাংশে চলে গেছে।”
তবে ঋণ-আমানতের অনুপাত যথাযথ নেই বলে মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, “আপনাদের মূলধনের অবস্থা ভাল। আপনাদের আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩ শতাংশের বেশি, ঋণ প্রদান বৃদ্ধি পাচ্ছে ১৪ শতাংশ। এটাকে পরিমাণ মত নিয়ে আসতে হবে।”
ব্যাংকিং খাতে যথেষ্ট তারল্য আছে জানিয়ে ‘এখন কর্পোরেট ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে’ জানিয়ে ফজলে কবির বলেন, “কর্পোরেট ব্যবস্থাপনা একটি চলমান সংস্কৃতি, এটি আপনাদের মধ্যে চর্চার ব্যাপার। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়।
আপনারা যে ঋণ প্রদান করেন সেই ঋণ যথাযথভাবে করবেন। বিশেষ করে যে কাজের জন্য ঋণ দিচ্ছেন সেই কাজ যেন হয় সেটা দেখবেন, মনিটরিং করবেন।
“এটি পুরো ব্যাংককিং ইন্ডাস্ট্রির জন্য প্রশংসার ব্যাপার। এতে করে আমার মনে হচ্ছে সমাজে আপনারা ভাল অবদান রাখছেন।”
দেশের অর্থনীতি অবস্থা মজবুত ভিত্তিতে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। এইজন্য আমাদের ব্যাংককিং খাতের অনেক দায়িত্ব আছে।”
২০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি
অনুষ্ঠানে ২০১৮ সালে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাস করা ২০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়। তাদেরকে স্নাতক পর্যায়ে আগামী চার বছর এ বৃত্তি দেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা মাসিক তিন হাজার এবং এককালীন আট হাজার টাকা বৃত্তি পাবে।
বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে গভর্নর বলেন, “একটি কথা তোমাদের মনে রাখতে হবে, যারা বৃত্তি পেতে যাচ্ছ তোমরা কিন্তু তোমাদের মেধার জোরে বৃত্তি পাচ্ছো।এটি কিন্তু কোনো দয়া নয়, এটা তোমাদের মেধার কারণে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে
“আমি বলব আল আরাফাহ ব্যাংক তোমাদের স্বীকৃতি দিয়ে ধন্য হয়েছে।”
“আমি আশা করব, তোমরা যে পেশাতেই থাকো না কেনো সুনাগরিক হবে।যে অঙ্গনেই থাক সেখান থেকেই অবদান রাখবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ লাবু। বৃত্তি প্রাপ্তদের মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য মনোনিত শিক্ষার্থী মাসুদ রানা, মার্জিয়া খানম যুথী, পারভেজ রহমান এবং ইশরাত জাহান মুন বক্তব্য রাখেন।