ভোটের বছরে বাজারে কালোটাকার ছড়াছড়ি বাড়তে পারে মন্তব্য করে ব্যাংক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
Published : 28 Jan 2018, 01:42 PM
রোববার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রূপালী ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর এ বক্তব্য আসে।
তিনি বলেন, ব্যাংকের ক্ষেত্রে অ্যাভডান্স-ডিপোজিট রেশিও (ঋণ ও আমানতের অনুপাত) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশে ওই অনুপাত সাধারণ মাত্রার চেয়ে উঁচুতে আছে, যা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।
“এটা দেখে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার তাদের বিশেষভাবে জোর দিতে হবে, কারণ আপনারা সবাই জানেন এ বছর নির্বাচনের বছর। এ বছর টাকা পয়সার ছড়াছড়ি বেশি হবে, কালো টাকা হয়ত যথেষ্ট আসবে বাজারে, এ বছর সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।”
তবে যারা কেবল বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ করেন, তাদের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন অর্থমন্ত্রী।
“ব্যাংকিং ব্যবস্থা যথন শুরু হল তখন সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল ডিফল্ট; ডিফল্ট রেট অর্ধেকের বেশি ছিল। সেখান থেকে ডিফল্ট রেট কমে এসেছে সরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে গড়ে ১১ পার্সেন্টের মত। আমরা যথেষ্ট উন্নতি সাধন করেছি।”
মুহিতের ভাষায়, দেশের ব্যাংক খাত আস্তে আস্তে প্রসার পাচ্ছ। এ খাতের অবস্থা এখন ‘মোটামুটি ভালো’। ব্যাংক খাত যদি দুর্বল হত, তাহলে অর্থনৈতিক উন্নয়নও সম্ভব হত না।
রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, আগামী বছরই রূপালী ব্যাংক শীর্ষ অবস্থানে পৌঁছাবে বলে তারা আশা করছেন। তারা এমন জায়গায় যেতে চান, যেখানে দেশে রূপালী ব্যাংকের সেবা্ই হবে সবার সেরা।
ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির আবেদন করে আতাউর রহমান বলেন, “৩০০ কোটি টাকা পেইডআপ ক্যাপিটাল দিয়ে এ ব্যাংক খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। ৯০০ কোটি টাকা ক্যাপিটাল দিলে রূপালী ব্যাংক আর পেছনে থাকবে না।”
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাহেব বিশেষ আবেদন করেছেন। এর জন্য প্রতিবছর বাজেট থেকে প্রচুর পয়সা দেই। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন বাজেটের টাকা, মানুষের টাকা ব্যাংক খাতে দেওয়া- এটা ঠিক নয়। আমি বলব এটা ঠিক, কারণ ব্যাংক খাতে কোনো একটা ব্যাংকের বিপর্যয় আমরা হতে দিতে পারি না।”
আগামী বাজেটেই রূপালী ব্যাংকের জন্য সুখবর আসতে পারে বলে আশ্বাস দেন অর্থমন্ত্রী।
“তাদের হাত ধরে উঠিয়ে নিয়ে আসতে হবে। তাদের উন্নয়ন হলে সাধারণ মানুষের উন্নয়ন হবে; এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের বেশ কর্মসংস্থান হবে।”
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ইউনুসুর রহমান, রূপালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন এবং পরিচালকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।