আয়কর মেলার সময় বাড়ানোয় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন করদাতা ও আয়কর সেবাগ্রহীতারা। দিনভর দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত মেলা প্রাঙ্গণ সন্ধ্যার পরেও ছিল কর্মমুখর।
Published : 05 Nov 2017, 10:35 PM
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার মেলার পঞ্চম দিন সকাল ৮টায় খুলে মেলার বুথগুলো দর্শনার্থীদের জন্য চালু ছিল রাত ৮টা পর্যন্ত। ৮টার কিছু সময় পরেও আয়কর সেবা নিয়েছেন কয়েকজন।
দর্শনার্থী ও সেবাগ্রহীতাদের ভিড় দেখে শনিবার মেলার সময় সকালে দুই ও সন্ধ্যার পরে তিন ঘণ্টা বাড়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোর মতোই রোববার দুপুরে মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় জমান বিভিন্ন ধরনের সেবা নিতে ইচ্ছুক করদাতারা। ট্যাক্স আইডি কার্ড সংগ্রহের বুথগুলোকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় করদাতাদের কয়েকটি সারি। তবে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই এগিয়ে যাচ্ছিল কার্ড গ্রহণের প্রচেষ্টা।
মেলার সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে কথা হয় একটি বেসরকারি মোবাইল অপারেটরের কর্মকর্তা আকতার হোসেন ও বরুণ কুমার মজুমদারের সঙ্গে।
মেলার প্রবেশ মুখেই আয়করের ফরম পূরণ করতে করদাতাদের বসার জন্য কিছু চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় সেই ফরম পূরণ করতে কার্পেটের বিছানায় বসে পড়তে দেখা যায় অনেককে। দিনভর নানা বয়সী নারী-পুরুষকে ব্যস্ত দেখা যায় ফরম পূরণে।
রাত ৮টার দিকে নিজের কর্মজীবী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তড়িঘড়ি করে রিটার্ন দাখিলের চেষ্টা করছিলেন চাঁদনী টেক্সটাইল মিলের কর্মী সুরুজ মিয়া ফিরোজ সরকার।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেয়ের অফিস শেষ না হওয়ায় আসতে পারছিলাম না। কিন্তু বিকালে কলাবাগান থেকে রওনা হয়ে এখানে আসতে আসতে ৮টা বেজে গেল। কর্মকর্তারা রিটার্ন দাখিলের কাগজ নিয়েছেন এবং কোনো বিপত্তি ছাড়াই স্মার্ট কার্ড দিয়েছেন।”
পঞ্চাশোর্ধ্ব ফিরোজ মিয়া জীবনে এবারই প্রথম আয়কর দিয়েছেন বলে জানান।
“আয়কর দেওয়া একটা গর্বের ব্যাপার। আমি ৫ হাজার টাকার মতো আয়কর দিয়েছি। বিনিময়ে পেয়েছি সরকারি স্বীকৃতি। মানুষ এখন অনেক স্মার্ট চিন্তাভাবনা করে। সবাই নিজেকে করদাতার কাতারে ভাবতে পছন্দ করে। কয়েক বছর আগেও কর দিতে মানুষের এতো আগ্রহ দেখা যায়নি,” বলেন তিনি।
ট্যাক্স আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে আসা ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষক নাদিরা জাহান ও সৌমিত্র সরদার জানান, তারা মেলা প্রাঙ্গনে এসে মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে সব কাজ শেষ করেছেন। বিকালের দিকে ভিড় কিছুটা কমে যাওয়ায় তেমন সমস্যা হয়নি।
এনবিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আয়কর মেলার পঞ্চম দিনে সারা দেশে ২৭২ কোটি টাকার কর আদায় হয়েছে। রিটার্ন জমা দিয়েছেন ৪৮ হাজারের বেশি করদাতা। কর সংক্রান্ত সেবা নিয়েছেন এক লাখ ৮০ হাজার মানুষ।
এদিন ঢাকাসহ দেশের ৫৩টি জেলা এবং ৩৫টি উপজেলার ৯৯টি স্পটে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়।