সিপিডির হিসাবে, ঢাকা শহরে চার সদস্যের একটি পরিবারের মাসিক খাবার খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৬৬৪ টাকা, যা ২০১৯ সালে ছিল ১৫ হাজার ৭০৫ টাকা।
Published : 27 Mar 2023, 07:51 PM
আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দর কমলেও দেশের ‘দুর্বল বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে’ তার কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-সিডিপি।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, “তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, কিছু কিছু পণ্যর দাম আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়েও বেশি। বিশেষ করে দেশের বাজারে চাল, সয়াবিন তেল, চিনি ও মাংসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে বেশি। নিত্যপণ্যর দর বৃদ্ধির হার আন্তর্জাতিক পর্যায়ের চেয়েও বেশি।”
সোমবার ঢাকার ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
ফাহমিদা বলেন, বাজার পর্যবেক্ষণ দুর্বলতা থেকেই যাচ্ছে। এ কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
“টাকার মান কমে যাওয়ায় অন্তত ২৮টি নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যে এখনও উচ্চ হারে আমদানি শুল্ক কর রয়েছে। এটিও মূল্যস্ফীতির জন্য দায়ী।”
খরচ বাড়ার পরিসংখ্যান তুলে ধরতে গিয়ে ফাহমিদা বলেন, “ঢাকা শহরে চার সদস্যের একটি পরিবারের খাবার তালিকায় মাছ-মাংস থাকলে প্রতি মাসে খাদ্য বাবদ খরচ ২০১৯ সালে ছিল ১৫ হাজার ৭০৫ টাকা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বেড়ে তা হয়েছে ২২ হাজার ৬৬৪ টাকা।’’
মাছ, মাংসসহ পরিবার প্রতি খাবার খরচ ২০২০ সালে প্রতি মাসে ছিল ১৬ হাজার ৮৩১ টাকা, ২০২১ সালে ১৭ হাজার ৫২ টাকা এবং ২০২২ সালে সেই পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ১১৫ টাকা।
সিপিডি নির্বাহী পরিচালক বলেন, “মূল্যস্ফীতির বর্তমান চাপে নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষ খাদ্য তালিকায় কাঁটছাট করে জীবন নির্বাহ করছে। একটি পরিবার যদি খাদ্য তালিকা থেকে মাছ-মাংস বাদ দেয়, তাহলে খাদ্য খাতে ব্যয় হয় (গত ফেব্রুয়ারি) ৭ হাজার ১৩১ টাকা, ২০১৯ সালে যা ছিল ৪ হাজার ৭১২ টাকা।”
নিত্যপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ১৭টি পণ্যের টিসিবি সংগৃহীত দামের তথ্য বিশ্লেষণ করে খরচের হিসাবটি দাঁড় করানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সিপিডি। টিসিবির তালিকায় তরল দুধ, কলা ও আলুর বাজার দর না পাওয়ায় এ তিনটি পণ্য বাদ দিয়েই হিসাবটি করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থাটি।
মূল্যস্ফীতির কারণে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি শেষে ঢাকা শহরে পরিবার প্রতি মাছ-মাংসসহ নিয়মিত খাদ্যর পিছনে খরচ বেড়েছে ২৫ দশমিক ১১ শতাংশ।
আর মাছ-মাংস বাদ দিয়ে খাবারের পেছনে ব্যয় বেড়েছে ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “অন্তত এ মাসে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দিতে পারে। শিল্প খাতেও এখন মজুরি সমন্বয় করা প্রয়োজন।”