“ব্যাংকসহ দেশের আর্থিক খাত গত ৫৩ বছরে অনেকদূর এগিয়েছে। তবে যতদূর আগানোর কথা ছিল, ততোদূর আগাতে পারেনি বলে আমি মনে করি।”
Published : 29 Dec 2024, 05:56 PM
আমানতকারী ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করতে না পারলে ব্যাংক খাত খাদের কিনারায় চলে যাবে বলে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
রোববার মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গভর্নর বলেন, “ব্যাংকসহ দেশের আর্থিক খাত গত ৫৩ বছরে অনেকদূর এগিয়েছে। তবে যতদূর আগানোর কথা ছিল, ততোদূর আগাতে পারেনি বলে আমি মনে করি। বিভিন্ন অর্জন সত্ত্বেও আমাদের অনেক ব্যর্থতা রয়েছে।”
এ ব্যর্থতার দায় ‘এককভাবে কোনো গোষ্ঠী বা একক শক্তির নয়’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “হয়ত সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে পারতাম। হয়ত সেটার ব্যত্যয় হয়েছে, হয়ত হয়নি। কিন্তু এই ব্যর্থতার আত্মবিশ্লেষণও করতে হবে।”
ব্যাংকারদের উদ্দেশে গভর্নর বলেন, “আমানতকারী ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করতে না পারলে এই খাত খাদের কিনারায় চলে যাবে। তাই ব্যাংকিং খাত বিকাশের জন্য বিআইবিএমের মত প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের বিকল্প নেই।”
কোনো প্রতিষ্ঠান এককভাবে দাঁড়াতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “অন্যের সহযোগিতা নিয়েই তাকে দাঁড়াতে হয়। দেশের আর্থিক খাতও ঠিক তেমনই। আর্থিক খাত ছোট খাত নয়, এর সঙ্গে ব্যাংকিংসহ আরও অনেক খাত জড়িত।”
বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আক্তারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন। সঞ্চালনা করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক শাহ মো. আহসান হাবীব।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, “ব্যাংক কোন খাতে কী পরিমাণে টাকা ব্যয় করবে তার লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট থাকে। কিন্তু কীভাবে এই অর্থ ব্যয় করা হবে সে বিষয়ে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানেন না। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ বিষয়ে ব্যাংক কর্মকররাদের ধারণা বাড়াতে কাজ করতে পারে বিআইবিএম। এছাড়া গ্রিন বন্ডের মত নতুন নতুন উদ্ভাবনী চিন্তাও নিয়ে আসতে হবে।”
মাসরুর আরেফিন বলেন, “যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যাংকিং খাতেও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, ব্লক চেইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা বাড়াতে হবে।”
দেশের ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা ‘একটি পর্যায়ে’ চলে এসেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “প্রতিটি ব্যাংক এখন গ্রাহকদের ডিজিটাল সেবা দিচ্ছে। তবে ব্যাংকগুলো হয়ত ডিজিটাল ঋণ কম দিচ্ছে বা দিতে চাইছে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নজর দেবেন বলে আমি আশা করি।”