আর্থিক ব্যবস্থার সম্ভাব্য ঝুঁকি ও দুর্বলতা চিহ্নিত করার জন্য ফাইন্যান্সিয়াল প্রজেকশন মডেল (এফপিএম) বাস্তবায়ন করার কথা বলেছেন তিনি।
Published : 07 Jun 2024, 12:57 AM
আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তৃণমূলে থাকা জনগোষ্ঠীকে গভীরভাবে ব্যাংক খাতে সম্পৃক্ত করার চলমান উদ্যোগ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি এসেছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশ গড়তে লেনদেন ব্যবস্থাকে ‘ডিজিটাল ও ক্যাশলেস’ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৪৭০ কেটি ডলারের ঋণ চুক্তিতে যাওয়ার আগে ও পরে আর্থিক খাতে সংস্কারের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
চলতি অর্থবছরের মত আগামীতেও তা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে বৃহস্পতিবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, “ইতোমধ্যে বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
“আর্থিক ব্যবস্থার সম্ভাব্য ঝুঁকি ও দুর্বলতা চিহ্নিত করার জন্য ফাইন্যান্সিয়াল প্রজেকশন মডেল (এফপিএম) বাস্তবায়ন করা হয়েছে।”
এবারের বাজেটের শিরোনাম ‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা’। আর সেই যাত্রায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯১ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন মাহমুদ আলী।
বাজেট প্রস্তাবের ‘আর্থিক খাতের সংস্কার এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি’ অধ্যায়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও আধুনিক পরিশোধ ব্যবস্থার প্রসার ঘটানো হচ্ছে। এমএফএস এর মাধ্যমে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ভাতা প্রদান, ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচিতে এমএফএস হিসাবের ব্যবহার, এবং ব্যাংকের সাব-ব্রাঞ্চ ও এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থারও পরিসর বাড়ছে।
পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন উৎসাহিত করতে এক হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম চালু রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় সরকার ‘গ্রিন বন্ড’ সংক্রান্ত নীতিমালা হালনাগাদ করবে।
আন্তঃব্যাংক লেনদেনের চিত্র বুঝতে, ঝুঁকি এবং তার প্রভাব ধরতে ‘ইন্টার ব্যাংক ট্রানজেকশন ম্যাট্রিক্স’ বাস্তবায়ন করা হয়েছে জানিয়ে বাজেট প্রস্তাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, “ব্যাংকসমূহের পারস্পরিক তুলনামূলক অবস্থা বিশ্লেষণের জন্য হেল্থ অ্যাসেসমেন্ট টুল ব্যবহার করা হচ্ছে।”
ব্যাসেল-৩ নীতির আওতায় সরকার ব্যাংকের সংরক্ষিতব্য মূলধন বাড়ানো ও গুণগত মান বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, 'ব্যাংক আমানত বীমা আইন-২০০০' সংশোধন করার বিষয়টিও সংসদে তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সুইস ব্যাংকসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাচার অর্থ বা সম্পদ উদ্ধারের কৌশল নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন এবং 'পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার: আইনি কাঠামো ও কৌশলগত প্রক্রিয়া' শীর্ষক গাইডলাইন অনুমোদন করা হয়েছে।”
ভুয়া ও বেনামি ঋণগ্রহীতাকে খুব সহজে শনাক্ত করতে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী।
গত বছরের ২৩ অক্টোবর ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক লিমিটে ‘ ও ‘কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক’ নামের দুটি ব্যাংকের লেটার অব ইনটেন্ট দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর মধ্যে গত ৩ জুন ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক লিমিটেড’কে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর ‘কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক’ শর্ত পূরণে আরও সময় চেয়েছে।