সদ্য সমাপ্ত নভেম্বরে প্রবাসীরা ১৫৯ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন দেশে, এই অঙ্ক তার আগের দুই মাসের চেয়ে বেশি।
নভেম্বরের রেমিটেন্সের এই অঙ্ক গত বছরের একই মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি। ২০২১ সালের নভেম্বরে প্রায় ১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার এসেছিল।
ইউক্রেইন যুদ্ধের জেরে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে প্রবাসী আয় গত কয়েক মাস ধরেই কমছিল। অগাস্টে যেখানে ২০৩ কোটি ডলার এসেছিল, সেপ্টেম্বরে তা কমে হয় ১৫৪ কোটি ডলার।
এর পরের মাস অক্টোবরে রেমিটেন্স আরও কমে ১৫৩ কোটি ডলার হয়, যা ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এই হিসাবে নভেম্বরে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ আগের মাসের চেয়ে বেড়েছে ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।
চলতি অর্থ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে মোট রেমিটেন্স এসেছে ৮৭৯ কোটি ডলার, যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ৮৬১ কোটি ডলার।
অর্থাৎ পাঁচ মাসে আগের বছরের তুলনায় এ সময়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে ১৮ কোটি ডলার বা ২ দশমিক ১ শতাংশ।
বৈধ উপায়ে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে সরকার নগদ প্রণোদনার হার ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২.৫ শতাংশ করেছিল আগেই। চলতি অর্থবছর থেকে একদিনে যেকোনো অংকের রেমিটেন্স পাঠানোর সুযোগও দেওয়া হয়, তুলে নেওয়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমার বাধ্যবাধকতাও। তাছাড়া ব্যাংকিং চ্যানেলের নিজস্ব এক্সচেঞ্জ হাউজের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠাতে চার্জ তুলে দেওয়া হয়। এর পরও কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না রেমিটেন্স।
এজন্য হুন্ডিকে দায়ী বৃহস্পতিবার বিআইডিএসের বার্ষিক সম্মেলনে করে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, “রেমিটেন্স কমে যাওয়ার বড় কারণ হচ্ছে হুন্ডি। এজন্য রেমিটেন্স আনা সহজ ও আমদানিতে ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ করা হচ্ছে।”
প্রবাসীরাও যাতে বাংলাদেশি মোবাইল এমএফএস (বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ, উপায়, নগদ ইত্যাদি) অ্যাকাউন্ট খুলতে ও পরিচালনা করতে পারেন, সেই সুবিধা শিগগিরই চালু করা হবে বলে মঙ্গলবার এক পরিপত্রে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ফলে বিদেশে বসে বাংলাদেশিরা কোনো এজেন্ট ছাড়াই দেশে তৎক্ষণাৎ রেমিটেন্স যেমন পাঠাতে পারবেন, তেমনই দেশে এসেও নিজের সেই অ্যাকাউন্টের অর্থ ব্যবহার করতে পারবেন।
এ উদ্যোগের কথা টেনে বিআইডিএসের অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, “রেমিটেন্স আনা সহজ করতে মোবাইলে আনার সুযোগ হচ্ছে। রেমিটেন্স পাঠানোর খরচ বন্ধ করা হয়েছে। আগামী ৩-৬ মাস অপেক্ষা করতে হবে। প্রবাসীরা নিজেই রেমিটেন্স পাঠাতে পারবেন, তখন রেমিটেন্সে একটি বড় উল্লম্ফন দেখা যাবে।”