অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে সংস্থাটির কাছ থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ।
Published : 21 Oct 2022, 11:21 PM
ঋণ নিয়ে আলোচনার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধি দল আগামী বুধবার ঢাকায় আসছে বলে শুক্রবার বিবৃতিতে জানিয়েছে সংস্থাটি।
সফরকারী দলটি ২৬ অক্টোবর বুধবার থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত ১৫ দিন ঢাকায় অবস্থানকালে বাংলাদেশের জন্য আগামীর ঋণ কর্মসূচি এবং নতুন করে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ দিতে অর্থনৈতিক ও আর্থিক খাতের সংস্কার ও নীতি নিয়ে আলোচনা করবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ঢাকায় আইএমএফ মিশনের প্রধান রাহুল আনন্দ এ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।
প্রতিনিধি দলটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি বাংলাদেশে সরকারের নীতি নির্ধারক এবং অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গেও আলোচনা করবে। এই প্রতিনিধি দলের ঢাকা আসার মধ্য গিয়ে ঋণ কর্মসূচি নিয়ে কথাবার্তা শুরু হবে, যা আগামী মাসগুলোতেও চলমান থাকবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
করোনাভাইরাস মহামারীর পর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর মধ্যে ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাবে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি তৈরির কারণে বাংলাদেশের রিজার্ভের ওপরও চাপ তৈরি হয়। এমন প্রেক্ষাপটে ডলার সাশ্রয়ে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি বিদেশি উৎস থেকেও অর্থায়ন পাওয়ার চেষ্টা করছে সরকার।
এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা আইএমএফের কাছ থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ চায়।
সংস্থাটির কাছ থেকে নিয়মিত কোটার আওতায় পুরো অর্থ এবং রেসিলিয়ান্স অ্যান্ড সাসটেইনেবলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) প্রোগ্রাম থেকে এবার ঋণ চেয়ে ইতোমধ্যে প্রস্তাব দেয়।
আইএমএফ মিশনের ঢাকা সফরের কথাবার্তার মধ্যেই গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রস্তাবিত ঋণের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
সেখানে তিনি চলতি অর্থবছরেই প্রাথমিকভাবে দেড় বিলিয়ন ডলার পেতে আলোচনা হয়েছে বলে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।
আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় এবার তিনি অর্থমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
ওই বৈঠকের সাইডলাইনে আইএমএফের পাশাপাশি বিশ্ব ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলাদা বৈঠক করেন গভর্নর। সেখানে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটির কাছ থেকে এক বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা নিয়ে কথা বলেন।
ইউক্রেইন যুদ্ধ পরবর্তী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্য ঠিক রেখে দেশের অর্থনীতির গতি ধরে রাখতে এ দুই সংস্থার কাছে সাড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়ে প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ।
এর বাইরে জাপানের কাছ থেকেও বাজেট সহায়তার আওতায় ঋণ পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।
বাংলাদেশের ঋণ আবেদনের বিষয়ে আলোচনার জন্য এর আগে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা সংস্থার মিডিয়া বিফ্রিংয়ে জানিয়েছিলেন আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর অ্যান-মারি গুলদে-উলফ।
শুক্রবার সংস্থাটির প্রতিনিধি দলের আসার দিনক্ষণ জানিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সফরের উদ্দেশ্য হল কর্মকর্তা পর্যায়ের চুক্তির অগ্রগতির জন্য আলোচনা করা। সম্ভাব্য বর্ধিত ঋণ সুবিধা (ইসিএফ) বা বর্ধিত তহবিল সুবিধা কর্মসূচি এবং নতুন চালু রেসিলিয়ান্স অ্যান্ড সাসটেইনেবলিটি ফ্যাসিলিট (আরএসএফ) এর অধীনে ঋণ নিয়ে আলোচনার কথা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, আরএসএফ ঋণের অধীনে সাশ্রয়ী ও দীর্ঘমেয়াদে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার জন্য জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোকে অর্থায়ন করা হয়।