বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে এ সপ্তাহেই আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে আইএমএফ।
Published : 16 Oct 2022, 02:58 PM
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে বাংলাদেশ যে ঋণ চেয়েছে, সে বিষয়ে আলোচনা শুরুর জন্য প্রস্তুত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলে নিতে আন্তর্জাতিক এই ঋণদাতা সংস্থার কাছ থেকে বাংলাদেশ তার নিয়মিত কোটার আওতায় পুরো অর্থ এবং রেসিলিয়ান্স অ্যান্ড সাসটেইনেবলিটি ট্রাস্ট প্রোগ্রাম থেকে ঋণ চেয়েছে।
আইএমফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর অ্যান-মারি গুলদে-উলফ বৃহস্পতিবার এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেছেন, “আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামী সপ্তাহেই এই আলোচনা শুরু হচ্ছে।”
জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গত অগাস্টে আইএমএফ থেকে সাড়ে ৪০০ কোটি ডলারের ঋণ চায় বাংলাদেশ। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেছিলেন, কী পরিমাণ ঋণ পাওয়া যাবে, তা দাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত হবে।
করোনাভাইরাস মহামারীতে দেশের অর্থনীতিতে ধাক্কা এবং এরপরই রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দামের উর্ধ্বগতির মধ্যে বাইরের উৎস থেকে তহবিল খুঁজছে বাংলাদেশ।
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে টানাপোড়েনে মার্কিন ডলারের দর চড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশর রিজার্ভের ওপরও চাপ পড়েছে এবং রেকর্ড বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
গত সপ্তাহে আইএমএপের পূর্বাভাসে বলা হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ শতাংশ, যা আগের প্রাক্কলনে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ ধরা হয়েছিল।
গুলদে-উলফ মনে করেন, বাংলাদেশ এ বছর এখনও অর্থনৈতিকভাবে ‘শক্তিশালী হচ্ছে’, তবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কক্ষচ্যুত হওয়ার শঙ্কাও বাদ দেওয়া যাচ্ছে না।
আইএমএফের এই কর্মকর্তা বলেন, “আমরা ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আশা করছি (বাংলাদেশের); কিন্তু বিশ্বব্যাপী কিছু সমস্যা রয়েছে, যা তাৎপর্যপূর্ণ।
“বাংলাদেশ একটি রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির দেশ এবং এর প্রধান আন্তর্জাতিক বাজারগুলোতে ঝক্কি-ঝামেলার কারণে আগামী বছর আমাদের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬ শতাংশ।”
বাংলাদেশের টাকার প্রায় ২০ শতাংশ অবমূল্যায়ন হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “রিজার্ভ কমে গেছে। বাংলাদেশ এখনও স্বস্তির পর্যায়ে আছে, কিন্তু সূচক নিম্নগামী হচ্ছে।”
আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে, তার প্রশংসা করেন গুলদে-উলফ। তার ভাষায়, বাংলাদেশের এই তৎপরতা অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে এবং আরও বাজে পরিস্থিতি এড়াতে সাহায্য করবে।