আগের মাসে গ্রাহকরা টাকা তুলতে হুমড়ি খেয়ে পড়লে ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সংকট তৈরি হয়।
Published : 07 Nov 2024, 12:58 AM
ব্যাংকে রাখা আমানতের কিছু অংশ আবার ফিরতে শুরু করেছে; সেপ্টেম্বরে ব্যাংকের বাইরে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ আগের মাসের চেয়ে কমেছে আট হাজার কোটি টাকা।
ব্যাংকাররা বলেছেন, ব্যাংকে আমানতের বিপরীতে ও বন্ডে বিনিয়োগের উচ্চ সুদহারের পাশাপাশি কিছু ‘দুর্বল’ ব্যাংক ঘিরে গ্রাহকদের মধ্যে যে আস্থাহীনতা শুরু হয়েছিল সেটির প্রভাব কমে আসার কারণে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে গ্রাহকরা কিছু ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছিলেন। গ্রাহকরা টাকা তুলতে হুমড়ি খেয়ে পড়লে ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সংকট তৈরি হয়।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে চলতি বছর অগাস্টে ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকা বেড়েছিল। সেপ্টেম্বরে তা ৮ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা কমে ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, অগাস্টে ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকা ছিল ২ লাখ ৯২ হাজার ৪৩৪ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের মাস জুলাইয়ের চেয়ে অগাস্টে নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছিল ৮০৪ কোটি ৯ টাকা। সেপ্টেম্বরে বাইরে থাকার টাকা কিছুটা আবার ব্যাংকিং চ্যানেলে ফিরেছে।
ব্যাংকাররা মনে করছেন, জুলাই-অগাস্টে সংঘাতের কারণে ব্যাংক খাত নিয়ে এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হয়েছিল। সে সময় ব্যাংকখাত থেকে আমানত কমে যায়। বিশেষ করে শরিয়াভিত্তিক ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর ওপর গ্রাহকদের অনাস্থা তৈরি হয়েছিল। তাছাড়া ইসলামী ধারার ব্যাংক ছাড়াও অন্যান্য ব্যাংক থেকেও আমানত তুলে নেওয়া হয়। এতে আমানত কমে গিয়েছিল।
এমন প্রেক্ষাপটে বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা এক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে গ্রাহকদের আরেক ব্যাংকে রাখার প্রবণতা বন্ধ করার আহ্বান জানায়।
তিনি বলেন, আমানতকারীদের মধ্যে আস্থার সংকটে সবাই একসঙ্গে টাকা তুলতে চেষ্টা করার কারণেই কিছু ব্যাংকে তারল্য সংকট তৈরি হয়।
এ বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ব্যাংক আমানতের সুদের হার বর্তমানে ট্রেজারি বিলের সুদের কাছাকাছি। তাই অনেকে ব্যাংকে আমানত রাখতে শুরু করায় টাকা ফিরছে।
তার ভাষ্য, “উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সবাই বেশি লাভ খোঁজে। তাই নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন জায়গায় বিনিয়োগ করতে চায় সবাই। তাই ব্যাংকে আবার টাকা ফেরত আসছে।“
এক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে আরেকটিতে রাখা বন্ধ করতে হবে: মুখপাত্র