Published : 21 Oct 2023, 01:37 PM
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের ২৬ দিন আগে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেলে পরীক্ষামূলকভাবে গাড়ি চালিয়ে দেখা হল।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এই ‘ট্রায়াল রান’ চলে। এই মহড়ায় নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ এবং টানেল ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন। এতে টানেলে গাড়ি চালানোর পাশাপাশি টোল আদায়, অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা, নিরাপত্তা, দুর্ঘটনার পড়া যানবাহন ব্যবস্থাপনা, দুর্ঘটনা হলে মানুষ সরিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়গুলো যাচাই করে দেখা হয়।
মহড়া শেষে টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, “নরমাল মুডে আমরা আগেই ট্রায়াল করেছি। আজ ইমার্জেন্সি মুডে ট্রায়াল করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে।”
আগামী ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন ২৯ অক্টোবর থেকে টানেল যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। কোনো নদীর তলদেশে দিয়ে যাতায়াত পথ বাংলাদেশে এটাই প্রথম।
কর্ণফুলী নদীর পতেঙ্গা ও আনোয়ারা প্রান্তকে যুক্ত করা এ টানেল ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ মডেলকে সামনে রেখে নির্মাণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে টানেলটি যুক্ত হবে এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাব উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা ও আগাম প্রস্তুতি, কী কী করণীয়, তা আমরা দেখেছি, যাতে ২৮ অক্টোবরের অনুষ্ঠান সুন্দর ও সফলভাবে করা যায়। এছাড়া উদ্বোধনের পর গাড়ি চলাচলের সময় কোনো ধরনের কিছু ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি আমরা দেখেছি।”
সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, টানেলে কোনো অগ্নিকাণ্ড ও দুর্ঘটনা ঘটলে কীভাবে আগুন নেভানো হবে এবং উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হবে, তার মহড়া করেছেন তারা।
তিনি বলেন, “টানেলে আগুন নেভানোর সুব্যবস্থা আছে। ৫০ মিটার পরপর হাইড্রেন্ট আছে। হোসরিল আছে। প্রতিটি হাইড্রেন্টের পাশে ‘কল পয়েন্ট’ আছে। সেখান থেকে টানেল ব্যবহারকারীরা ফোন করে টানেলের কন্ট্রোলে যে কোনো প্রয়োজনের বিষয়ে জানাতে পারবেন।”
টানেলের ভেতরে আগুনের ঘটনা ঘটলে যানবাহনে থাকা যাত্রীরা সহজে সরে যেতে পারবেন জানিয়ে রাজ্জাক বলেন, “টানেলের দুটি টিউবেই সড়কের এক পাশে কিছু দূর পরপর ম্যানহোলের মতো ঢাকনা দেওয়া আছে। ঢাকনা তুলে নিচের হাঁটা পথ পেরিয়ে অন্য টিউবে চলে যেতে পারবেন। এছাড়া যাতে ধোঁয়া না হয়, সেজন্য বড় আকারের ফ্যান টিউব দু’দিকের দেয়ালেই লাগানো আছে।”
টানেলে কোনো গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে তা টানেল কর্তৃপক্ষের রেকার ভ্যান দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হবে। ডাবল লেইন হওয়ায় তা করতে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে এবং আনোয়ারা প্রান্তে দুটি ফায়ার স্টেশন হবে। তবে এখনও ফায়ার স্টেশন দুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। সোমবার ট্রায়াল রানে আগ্রাবাদ ও কর্ণফুলী ফায়ার স্টেশনের ৫টি দলের ২৫ জন কর্মী অংশ নেন। পুলিশের একটি দলও এতে অংশ নেয়।
(প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)