চট্টগ্রামের সড়কে ৪৪% হেলমেট ছাড়া, সিটবেল্ট নেই ৮৫% চালকের

রোডসাইড অবসারভেশন স্টাডির এক সমীক্ষায় এই তথ্য ওঠে এসেছে।

ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম নগরীতে মোটরসাইকেল চালকের ৫৬ শতাংশ হেলমেট ব্যবহার করেন; আর গাড়ি ব্যবহারকারীদের মধ্যে সিটবেল্ট ব্যবহারের হার মাত্র ১৫ শতাংশ বলে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার নগরীর একটি হোটেলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) ও জনস হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিটের উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়।

ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেইফটি (বিআইজিআরএস), ২০২০-২০২৫ এর অংশ হিসেবে জনস হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট তাদের স্থানীয় অংশীদার সিআইপিআরবি’র সঙ্গে ২০২২ সালের মে মাস থেকে নগরীর সড়ক নিরাপত্তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য পর্যায়ক্রমে রোডসাইড অবজারভেশনাল স্টাডি পরিচালনা করেছে।

জনস হপকিন্স ইনজুরি রিসার্চ ইউনিটের শিরিন ওয়াধানিয়া ও সিআইপিআরবি’র পরিচালক (ট্রেনিং অ্যান্ড এডুকেশন) সেলিম মাহমুদ চৌধুরী সমীক্ষার ফলাফল উপস্থাপন করেন। এতে মোট তিন লাখ ৫৬ হাজার ৮৭২টি নমুনা পর্যবেক্ষণ করা হয়।

সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এতে বলা হয়, প্রায় ৪০ শতাংশ যানবাহন অনুমোদিত গতির থেকে বেশি গতিতে চলতে দেখা যায়।

সেলিম মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা রোডসাইড অবজারভেশনাল স্টাডি করেছি। সেখানে সবধরনের গাড়ির গতি, চালকের সিট বেল্ট বাঁধা আছে কি না, মোটরসাইকেল আরোহী হেলমেট ব্যবহার করেন কিনা এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

“কিছুদিন পরপর আমরা তথ্য সংগ্রহ করি। আগে দুবার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন তৃতীয় ধাপের তথ্য সংগ্রহ চলমান।”

এর সুপারিশে তিনি বলেন, “অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণ ও হেলমেট ব্যবহারের বিষয়টি নগর পুলিশ যদি কঠোরভাবে নজরদারিতে আনে, তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব। আগের সঙ্গে পরের তথ্য মিলিয়ে আমরা দেখতে পারব পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কি না।”

কর্মশালায় সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত কমাতে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ, অবাকাঠামো ও সার্বিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “কেবল আইন বা শাস্তি দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু সম্পূর্ণরূপে ঠেকানো সম্ভব নয়। এজন্য আমাদের গবেষণাভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং প্রয়োজনে বিদ্যমান অবকাঠামোর ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রয়োজন। আজকের এ গবেষণার তথ্য আমি নগরীর সড়ক ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে কাজে লাগাবো।”

চট্টগ্রাম সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সিআইপিআরব ‘র ডেপুটি ম্যানেজার (মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন) কাজী বোরহান উদ্দিনের সঞ্চালনায় সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) কাজী হুমায়ূন রশিদ, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালা আয়োজনে সহযোগিতা করে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) ও ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস।