গাড়িটি খালাস করতে হলে ৩০ দিনের মধ্যে শুল্ক-কর ও দুই ধরনের জরিমানা বাবদ মোট ৮৫ কোটি টাকা দিতে হবে জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেডকে।
Published : 19 Oct 2022, 12:03 AM
শুল্কায়ন নিষ্পত্তির আগেই ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার অপরাধে একটি রোলস রয়েস গাড়ির আমদানিকারককে ৫৭ কোটি টাকা জরিমানা করেছে চট্টগ্রামের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
এর মধ্যে ৫৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে অবৈধভাবে খালাস করে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের জন্য গ্যারেজে রাখায়। আর সরকার যাতে গাড়িটি বাজেয়াপ্ত না করে ছেড়ে দেয়, সেজন্য আরও আরও ৪০ লাখ টাকা ‘বিমোচন’ জরিমানা দিতে হবে।
চট্টগ্রাম ইপিজেডের কোম্পানি জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেড গত এপ্রিলে শুল্কমুক্ত সুবিধায় যুক্তরাজ্য থেকে গাড়িটি আমদানি করেছিল।
গাড়িটি ছড়িয়ে নিতে হলে এখন তাদের ওই ৫৭ কোটি টাকা জরিমানার পাশাপাশি শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হবে ২৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
অর্থাৎ, মোট ৮৫ কোটি টাকা দিলে তারপর গাড়িটি খালাস করতে পারবে আমদানিকারক কোম্পানি। সেজন্য ৩০ দিনের মধ্যে শুল্ক-কর ও দুই ধরনের জরিমানা পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের।
তবে আমদানিকারক চাইলে কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রাইব্যুনালে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ পাবেন।
আমদানিকারক কোম্পানির উপস্থিতিতে শুনানি করে গত ১২ অক্টোবর এই সিদ্ধান্ত দেন কাস্টমস কমিশনার ফাইজার রহমান। মঙ্গলবার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।
জুলাইয়ের শুরুতে ঢাকার গুলশানের বারিধারার একটি বাড়ি থেকে ৬ হাজার ৭৫০ সিসির রোলস রয়েস গাড়িটি জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। কালিনান এসইউভি মডেলের গাড়িটি তৈরি করা হয়েছে ২০২১ সালে।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, গত ২৭ এপ্রিল গাড়িটি আমদানি করার পর বন্দর থেকে ইপিজেড এলাকায় জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেডের কারখানা প্রাঙ্গণে নেওয়া হলেও শুল্কায়ন করা হয়নি। পরে ১৭ মে গাড়িটি চট্টগ্রাম ইপিজেড থেকে ঢাকার বারিধারায় কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহিরের বাড়িতে নেওয়া হয় বলে শুল্ক গোয়েন্দারা জানিয়েছিলেন।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফখরুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই গাড়িটি অবৈধভাবে অপসারণ করায় সে সময় জব্দ করা হয়েছিল।”
আর চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের বিচার আদেশে বলা হয়েছে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িটি আমদানি করলেও শুল্কায়ন হওয়ার আগে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সেটি অবৈধভাবে অপসারণ করা হয়েছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের সুযোগ না থাকলেও নিয়ম লঙ্ঘন করে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নিজস্ব বাসভবনে গাড়িটি রাখা হয়েছে।
“আবার যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হস্তান্তর করা হয়নি। এ কারণে আমদানিকারক এ গাড়িতে শুল্ক-কর অব্যাহতি পাওয়ার সুযোগ নেই।”
বাংলাদেশের অনন্ত গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেড, যেখানে রুমানিয়ার টাইমস ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং এসআরএল এরও বিনিয়োগ আছে বলে তথ্য দেওয়া হয়েছে তাদের ওয়েবসাইটে।
কাস্টমস আইন ভঙ্গের অভিযোগের বিষয়ে কোম্পানির বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।