বন্দরে শুল্ক নিষ্পত্তি না করায় গুলশানে রোলস রয়েস আটক

চট্টগ্রাম ইপিজেডের (সিইপিজেড) একটি প্রতিষ্ঠানের নামে আমদানি করা দামি একটি গাড়ি শুল্কায়ন নিষ্পত্তির আগেই ঢাকায় নিয়ে যাওয়ায় তা আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2022, 03:57 PM
Updated : 6 July 2022, 03:57 PM

বুধবার অধিদপ্তরের যুগ্মপরিচালক মো. শামসুল আরেফিন খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গুলশান থেকে গাড়ি আটকের কথা জানানো হয়।

রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের ২০২১ সালের কালিনান এসইউভি মডেলের গাড়িটি ৬ হাজার ৭৫০ সিসির বলে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দারা।

গাড়িটি সিইপিজেডের ‘জে এন্ড জে ইনটিমেটস লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে ২৭ এপ্রিল আমদানি করা হয়। তবে গাড়িটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিইপিজেডে কারখানা প্রাঙ্গণে নেওয়া হলেও শুল্কায়ন করা হয়নি। ১৭ মে গাড়িটি সিইপিজেড থেকে ঢাকার বারিধারায় নিয়ে যাওয়া হয়।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুলতান মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুল্ক নির্ধারণ ছাড়াই গাড়িটি বারিধারায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের এমডির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।”

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্মপরিচালক মো. শামসুল আরেফিন খানের নেতৃত্বে একটি দল গত সোমবার বারিধারায় ওই প্রতিষ্ঠানের এমডির গ্যারেজে গাড়িটির সন্ধান পান।

‘কাস্টমস শুল্কায়ন সম্পন্ন ও শুল্ক কর পরিশোধ না করে’ ব্যক্তিগত গ্যারেজে রেখে কাস্টমস আইন ১৯৬৯ এর বিধান লঙ্ঘন করায় গাড়িটি আটক করা হয় বলে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গাড়িটি এসআরও (স্ট্যারুচেরি রেগুলেটরি অর্ডারে) এবং কাস্টমস মূসক সিপিসি (কাস্টমস প্রসিডিউর কোড) ১৭০ এর আওতায় আমদানি করা। এই আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুসারে ২ হাজার সিসি পর্যন্ত গাড়ি আমদানি শুল্কমুক্ত হবে। গাড়ির বনেটে থাকা স্টিকারে গাড়িটি ৬ হাজার ৭৫০ সিসি বলে উল্লেখ আছে।

“আটক গাড়িটি ২০০০ সিসি’র বেশি হওয়ায় শুল্ক মুক্ত সুবিধা প্রাপ্য না হলে সরকার ২৪ কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে,” উল্লেখ করা হয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

গাড়িটি সংশ্লিষ্ট এসআরও অনুসারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে কিনা তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবে শুল্ক গোয়েন্দা।

আমদানির নথি অনুসারে, গাড়িটির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হংকং ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান।

আমদানির পর দুই মাসেরও বেশি সময় পার হলেও গাড়িটির শুল্কায়ন কেন করা হয়নি তা নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের তদন্ত চলমান বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার ফখরুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের কিছু আইনগত কোয়ারি থাকায় গাড়িটির শুল্কায়ন সম্পন্ন হয়নি। গাড়িটি যে প্রতিষ্ঠানের নামে আমদানি করা তারা নাম ও মালিকানা পরিবর্তন বিষয়ে আবেদন করেছে।

“সেটির নিষ্পত্তি হয়নি। এ বিষয়ে মতামত চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দেয়া হয়েছে। তাদের মতামত এখনও পাওয়া যায়নি। তবে শুল্ক মুক্ত সুবিধার আওতায় হোক বা শুল্কায়ন যোগ্য হোক এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের আগেই গাড়িটি ইপিজেড থেকে ঢাকায় নেয়া বেআইনি।”

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠানের এমডির নাম শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কেউই প্রকাশে রাজি হয়নি।

গাড়িটির শুল্কায়ন বা নাম পরিবর্তন বিষয়ে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।