এখানে আগুন লাগার আর কোনো শঙ্কাও নেই, বলছে ফায়ার সার্ভিস।
Published : 05 Mar 2023, 08:20 PM
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের প্রায় ২২ ঘণ্টা পর উদ্ধার কার্যক্রম শেষ করেছে ফায়ার সার্ভিস।
তবে রোববার দুপুরের মধ্যেই উদ্ধার কাজ প্রায় শেষ হয়ে যায় নতুন হতাহতের খোঁজ না থাকায়; বিকাল পর্যন্ত অপেক্ষা ছিল শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। নতুন করে আগুন লাগতে পারে এমন কিছুও আর নেই বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
বিকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. আব্দুল হালিম জানান, ঘটনাস্থল থেকে শনিবার বিস্ফোরণের পর শুধু তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। হতাহতরা বেশিরভাগই বাইরে ছিলেন। তবুও রাতে আমাদের দুটি ইউনিট স্ট্যান্ডবাই ছিল।
“ভোর থেকে পুনরায় অভিযানে নতুন করে কাউকে উদ্ধার করা হয়নি। এমনি কী কেউ কোনো মিসিংয়ের (নিখোঁজ) বিষয়েও আমাদের জানায়নি। এখানে আগুন লাগার আর কোনো শঙ্কাও নেই।”
এ জন্য স্ট্যান্ডবাই থাকা দুটি ইউনিটও প্রত্যাহার করা হয়েছে, জানান হালিম।
শিল্পে ব্যবহারের জন্য অক্সিজেন উৎপাদনকারী সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের অবস্থান সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে। শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সেখানে বিকট বিস্ফোরণে ছয়জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন অন্তত ২০ জন।
এর আগে ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল হামিদ মিয়া রোববার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “গত রাত ১১টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলেছে। আজ আবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়েছে।
“রাতে বা সকালে ভেতর থেকে নতুন কোনো মৃতদেহ কিংবা আহত কাউকে উদ্ধার করা হয়নি। কেউ নিখোঁজ থাকার তথ্যও তাদের হাতে নেই।”
তিনি বলেন, “গত বছর বিএম ডিপোতে আগুন লেগে বিস্ফোরণ হয়েছিল। এখানে বিস্ফোরণের কারণে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।"
বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকেই ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাদের উদ্ধার অভিযান অনেকটাই গুটিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু অভিযান শেষ করার কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি।
বিকাল ৪টার দিকে তদন্ত কমিটির সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযানের ইতি টানেন।
ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় প্রাণহানির পাশাপাশি এলাকাটি রূপ নিয়েছে ধ্বংসস্তূপে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আশপাশের কারখানা-বসতবাড়ি। সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। লোহার বেড়া আটকে রাখার অ্যাংগেলগুলো পর্যন্ত বেঁকে গেছে।
প্ল্যান্ট প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে সিলিন্ডার, লোহার টুকরো। ভেঙেচুরে একাকার হয়ে যাওয়া তিনটি ট্রাকও রয়েছে। কারখানা থেকে ৫০-৬০ গজ দূরে গিয়ে পড়ে রয়েছে লোহার টুকরো। শুধু তাই নয়, প্রায় ৫০০ গজ দূরে ছিটকে পড়া লোহার টুকরোর আঘাতে একজনের প্রাণহানিও হয়েছে।
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যেখানে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট গড়ে তোলা হয়েছিল, সেখানে সরু সড়কের দুই পাশে ৮-১০টি স্টিল রি-রোলিং মিল, তেলের রিফাইনারিসহ কয়েকটি শিল্পকারখানা ছিল; পাশাপাশি বসতবাড়িও রয়েছে।
আরও পড়ুন
সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার কাজ দ্বিতীয় দিনে
ঘনবসতির মধ্যেই সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট; উবে গেল প্রাণ, রেখে গেল ধ্বংসচিহ্ন
হঠাৎ বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন জীবন, ‘যাব কোথায়’?
লোহার টুকরা ৫০০ গজ উড়ে গিয়ে প্রাণ কাড়ল শামসুলের
সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে মৃত্যু বেড়ে ৬, রাতে উদ্ধার কাজে বিরতি
সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ তদন্তে কমিটি, চিকিৎসা খরচ দেবে সরকার