রায় ঘোষণার পর আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়।
Published : 20 Jan 2024, 11:50 AM
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাক্ষী কমডোর গোলাম রব্বানী হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া এক আসামিকে পুনর্বিচারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হালিম উল্লাহ বৃহস্পতিবার এই রায় দেন।
রায় ঘোষণার পর আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে বিলাই সাইফুলকে আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতের পিপি অশোক কুমার দাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০০৫ সালে দেওয়া রায়ে আসামি সাইফুল ইসলামকে খালাস দেওয়া হয়েছিল। সেই রায়ের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করলে হাই কোর্ট নতুন করে সাইফুলের বিচার করার নির্দেশ দিয়েছিল।
“ওই আদেশের পর দু’জন সাক্ষীকে পুনঃতলব করে সাক্ষ্য নেওয়া হয়। উভয়পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। আদালত আজ আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছেন।”
২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল মাইক্রোবাসে করে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় গুলিতে আহত হন চট্টগ্রামের কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রোসেসিং জোনের (কেইপিজেড) তখনকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর গোলাম রব্বানী। ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ দিন পর তার মৃত্যু হয়।
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের এডিসি হিসাবে দায়িত্ব পালন করা নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা রব্বানী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও নৌ-পরিবহন বিভাগের মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জেল হত্যা মামলায় তিনি সাক্ষ্য দেন।
গোলাম রব্বানী হত্যা মামলার রায়ে ২০০৫ সালে চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মোহাম্মদ সেলিম, মোহাম্মদ হাশেম ও আব্দুল মালেক সোহেল নামের তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
অপর দুই আসামি কেইপিজেডের সাবেক মহাব্যবস্থাপক আবু নাসের চৌধুরী ও সাবেক প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে দেওয়া হয় পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জারিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড।
খালাস দেওয়া হয় এ মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি মানসুর আলম ও সাইফুল ইসলাম ওরফে বিলাই সাইফুলকে।
এর বিরুদ্ধে বাদীপক্ষের আপিল শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রায় দেয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ। ২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়।
হাই কোর্টের ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, এ হত্যা মামলায় দুই আসামি আবু নাসের চৌধুরী ও হুমায়ুন কবিরকে ‘কম সাজা’ দেওয়া হলেও বিচারিক আদালত এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেনি।
হাই কোর্ট আবু নাসের চৌধুরী ও হুমায়ুন কবিরের সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
ট্রাইব্যুনালে যাবজ্জীবন পাওয়া তিন আসামির মধ্যে মো. হাশেম ও সোহেল হাই কোর্টে খালাস পান; মো. সেলিমের যাবজ্জীবন বহাল থাকে। আর খালাস পাওয়া আসামি সাইফুলের রায় নতুন করে দিতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
উচ্চ আদালতের ওই আদেশের পর চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করেন দুই আসামি- চট্টগ্রামের কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের (কেইপিজেড) সাবেক মহাব্যবস্থাপক আবু নাসের চৌধুরী ও মো. সেলিম।
খালাস পাওয়া আসামিদের মধ্যে সাইফুলের বিষয়ে বাদী পক্ষ হাই কোর্টে আপিল করলেও মানসুর আলমের বিরুদ্ধে করেনি।
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)