“জাহাজ পুরোপুরি দস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জলদস্যুরা ক্রুদের জাহাজের কেবিনে রেখেছে।”
Published : 12 Mar 2024, 09:52 PM
ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২৩ নাবিককে জিম্মি করেছে জলদস্যুরা।
কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি নৌপথে পণ্য পরিবহন করে। আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সেটি জলদস্যুর কবলে পড়ে।
এসআর শিপিংয়ের সিইও মোহাম্মদ মেহেরুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে জাহাজ থেকে তাদের বার্তা পাঠানো হয়।
“জাহাজ পুরোপুরি দস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জলদস্যুরা ক্রুদের জাহাজের কেবিনে রেখেছে। আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।”
জাহাজে থাকা নাবিক ও ক্রুরা হলেন জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিক উল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিসিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ, ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. নুর উদ্দিন ও মো. সালেহ আহমদ।
একটি মার্চেন্ট শিপের ক্যাপ্টেন আতিক ইউএ খান এক ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, তিনি ইনবক্সে কিছু মেসেজ পেয়েছেন, যেখানে বলা হচ্ছে আনুমানিক ৫০ জন সশস্ত্র জলদস্যু ওই জাহাজে অবস্থান করছে। জাহাজটি সোমালিয়ার আশপাশে আছে। জিম্মিদের মধ্যে সাতজন বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির সাবেক ক্যাডেট।
ছোট একটি ভিডিও তিনি ফেইসবুকে শেয়ার করেছেন। বলা হচ্ছে, জলদস্যুরা যখন ছোট ছোট বোটে করে এসে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তখন একজন নাবিকের মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও এটি। তবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর সত্যাসত্য যাচাই করতে পারেনি।
এর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। নিকেলভর্তি ওই জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের মাথায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা। পরে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
জাহান মণির মালিক প্রতিষ্ঠান ছিল চট্টগ্রামের ব্রেভরয়েল শিপিং ম্যানেজম্যান্ট লিমিটেডও কে এস আরএম গ্রুপের একটি সহযোগী কোম্পানি। মেহেরুল করিম তখন ব্রেভরয়েল শিপিং এর মহাব্যবস্থাপক ছিলেন।
সে সময় তিনি স্যাটেলাইট ফোনে দস্যুদের সঙ্গে দীর্ঘ দর ‘কষাকষির’ পর নাবিকদের মুক্তির বিষয়ে জলদস্যুদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘লিখিত চুক্তি’ করার কথা বলেছিলেন।
তবে তখনকার নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, "মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। সর্বপ্রকার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে জাহাজ ও এর নাবিকরা মুক্ত হয়েছে।"