বুধবার রাতে পাড়ার বাসিন্দারা যখন বড়দিনের উৎসব পালনে বাড়ির বাইরে ছিলেন, তখন আগুনে তাদের ১৭টি বসতঘর পুড়ে যায়।
Published : 26 Dec 2024, 09:52 PM
বান্দরবানের লামায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
বৃহস্পতিবার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বান্দরবান গোয়েন্দা সংস্থা ইঙ্গিত দিয়েছে, পলাতক সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সন্দেহভাজন ‘গুন্ডা’ জায়গা দখলের নামে এ ‘জঘন্য’ হামলা চালিয়েছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বান্দরবান জেলাপ্রশাসন ও পুলিশকে ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন।
“একইসঙ্গে তিনি প্রয়োজনীয় সরকারি সহযোগিতা করারও নির্দেশ দেন। বান্দরবান জেলা কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর পুনর্নির্মাণে সব ধরনের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকেও এ সংক্রান্ত আরও সহায়তা দেওয়া হবে বলে উপদেষ্টা জেলাপ্রশাসনকে নিশ্চিত করেছেন।”
বুধবার রাতে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বেতছড়া ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দারা যখন বড়দিনের উৎসব পালন করতে বাড়ির বাইরে ছিলেন, তখন আগুনে তাদের ১৭টি বসতঘর ভস্মীভূত হয়।
এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা চারজন হলেন- লামার সরই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের স্টিফেন ত্রিপুরা, যোয়াকিম ত্রিপুরা, মশৈম্যা ত্রিপুরা ও মো. ইব্রাহিম।
তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ দাবি পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের
আগুনে ঘরবাড়ি ভস্মীভূত হওয়ার ঘটনায় ‘গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা’ জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন।
সংগঠনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি বিগত চার-পাঁচ বছর আগে একদল লোক নিজেদের ‘এসপির লোক’ পরিচয় দিয়ে জোরপূর্বক পাড়াটি উচ্ছেদ করে বাগান করে।
“গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর দখলদাররাও পাড়া ছেড়ে চলে যান এবং জায়গাটিতে পূর্বে উচ্ছেদকৃত মূল বসবাসকারী ১৯টি ত্রিপুরা পরিবার পুনরায় পাড়ায় এসে ঘর তৈরী করে বসবাস শুরু করেন। পাড়াটি পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের স্ত্রীর নামে ইজারা দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।”
বিবৃতিতে তারা বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার অন্যতম হল ভূমি সমস্যা। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান হওয়ার কথা ছিল।
“কিন্তু পার্বত্য চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়ায় এভাবে প্রায়ই আদিবাসীদের ভূমি দখল, বিরোধ সমস্যা লেগেই আছে। ফলে নানাভাবে নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছেন আদিবাসীরা।”
এমকে/এআর
পুরনো খবর
পাহাড়ে ত্রিপুরা পাড়ায় পুড়েছে ১৭ ঘর, বাসিন্দারা ছিলেন বড়দিনের উৎসব