বন্দরনগরীর ইপিজেড, সল্টগোলা, হালিশহর ও পতেঙ্গা এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ কমছে না; নতুন করে কাট্টলী থেকেও আক্রান্ত রোগী আসছে হাসপাতালে।
এমন অবস্থার মধ্যে ডায়রিয়া ও কলেরা সংক্রমণের কারণ জানতে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাত সদস্যের একটি দল চট্টগ্রামে এসেছে। দলটি এসব এলাকার পানির নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।
এদিকে শনিবার সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে ২৮ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে।
এর আগের পাঁচ দিনে সেখানে ভর্তি হয় মোট ২৩৪ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী।
বিআইটিআইডির সহযোগী অধ্যাপক মো. মামুনুর রশীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাসপাতালে এখন ৬০ জন রোগী ভর্তি আছেন। রোগীদের থেকে নমুনা নিয়ে প্রতিদিনই যে পরীক্ষা করা হচ্ছে তাতে ২৮ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত কলেরা শনাক্ত হচ্ছে।
“হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম ও ব্যবস্থা আছে। তবে নতুন রোগী আসা কিন্তু কমছে না।”
এ হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা শুক্রবার ছিল ৪৬ জন। এর আগের দিন ছিল ৪০ জন ছিল।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো ইলিয়াছ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইইডিসিআর এর প্রতিনিধি দল নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। তারা তিন কর্মদিবসের মধ্যে কাজ শেষ করে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবেন। সেখান থেকে আমাদের জানানো হবে কারণ কী।”
এখনও কারণ জানা না গেলেও ডায়রিয়া ও কলেরা পানিবাহিত রোগ হওয়ায় পানি ফুটিয়ে পান করতে এবং খাবার খাওয়ার আগে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে মোট ৬৩ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যে।
তবে সিভিল সার্জন বলেন, জেলার জনসংখ্যা অনুসারে উপজেলা পর্যায়ে দৈনিক এই সংখ্যক লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়াটা স্বাভাবিক। উপজেলায় কোনো প্রকোপ নেই। নগরীতে একেক এলাকায় যে ৬০-৭০ জন করে আক্রান্ত হচ্ছে সেটাই উদ্বেগের।
ডায়রিয়া আক্রান্তরা বেশিরভাগই নগরীর চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (সিইপিজেড), ব্যারিস্টার সুলতান আহমদ কলেজ এলাকা, মাইলের মাথা, ধুপপুল, পতেঙ্গা, কাঠগড়, হালিশহর, ডবলমুরিং, কাট্টলী ও আগ্রাবাদসহ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দা।
নগরীতে গত সপ্তাহের শুরু থেকে এ প্রকোপ দেখা দেয়। আক্রান্তদের মধ্যে মাঝ বয়সী ও পুরুষের সংখ্যা বেশি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় স্যানিটেশন ব্যবস্থা নাজুক সেখানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।