কোতোয়ালি থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলছেন, যুব অধিকার পরিষদের চট্টগ্রামের ওই নেতাদের ‘পরিকল্পনাতেই’ ১৫ অক্টো্বর বিজয়া দশমীর দিনে পূজা মণ্ডপে হামলা হয়েছিল।
গ্রেপ্তাররা হলেন- যুব অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক মো. নাছির (২৫), সদস্য সচিব মিজানুর রহমান (৩৭), বায়েজিদ থানা শাখার আহ্বায়ক মো. রাসেল (২৬) এবং ইয়ার মোহাম্মদ (১৮), মো. মিজান (১৮), গিয়াস উদ্দিন, ইয়াসিন আরাফাত (১৯), হাবিবুল্লাহ মিজান (২১), মো. ইমন (২১)ও ইমরান হোসেন।
বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের সাতকনিয়া ও নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, হামলার পর ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ভিডিও এবং স্থির চিত্র দেখে তাদের চিহ্নিত করা হয়। সব মিলিয়ে ওই ঘটনায় মোট ১০০ জনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দুর্গা পূজার মধ্যে কুমিল্লার একটি মন্দিরে কুরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে ১৩ অক্টোবর কয়েকটি মন্দিরে হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়। এর পর দেশের বিভিন্ন জেলায় মন্দিরে ও পূজা মণ্ডপে হামলা হয়। তা ঠেকাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও বাঁধে, বিভিন্ন স্থানে প্রাণহানিও ঘটে।
কুমিল্লার ঘটনার জেরে ১৫ অক্টো্বর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের আগে চট্টগ্রাম নগরীর জেএম সেন হল পূজা মণ্ডপে হামলা হয়।
আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ থেকে জুমার নামাজের পর মিছিল নিয়ে এসে জেএম সেন হল পূজা মণ্ডপের গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায় হামলাকারীরা।পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করে। সেখানে ৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকশ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
তার মধ্যমেই সেদিন টেরিবাজার এলাকার দোকান কর্মচারী, ঘাটফরহাদবেগ, খলিফাপট্টি এলাকার লোকজনকে মিছিলে সম্পৃক্ত করা হয়েছিল বলে তারা তদন্তে জানতে পেরেছেন।
ওসি বলেন, যুব অধিকার পরিষদ নেতা মিজানুর আগে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ফেইসবুক গ্রুপ বাঁশের কেল্লার অ্যাডমিন প্যানেলেরও সদস্য ছিলেন তিনি।
“পরিকল্পিতভাবে মিছিল করে তারা মণ্ডপে হামলার চেষ্টা চালায়। হামলার পরপর অভিযান শুরু হলে তারা বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যায়। তাদের গতিবিধি নজরে রেখে সাতকারিয়া উপজেলা থেকে নাছিরকে এবং নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।”
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে যুব অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক নুরুল হক নূর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার ভিন্ন মত ও বিরোধীদের দমনে এই ঘটনাকে টুল হিসেবে ব্যবহার করছে। চট্টগ্রামে এখন বিএনপি-জামায়াত কোণঠাসা, আমাদের সংগঠনটা অনেক সক্রিয়, বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলে, প্রতিবাদ করে। যে কারণে বেছে বেছে আমাদের নেতা-কর্মীদের জড়ানোর চেষ্টা চলছে।”
তিন নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শুক্রবার বিকারে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা জানান চাকরির কোটা বিলোপ আন্দোলন দিয়ে আলোচনায় আসা নূর।