কুমিল্লার ঘটনা ‘সাজানো’ মনে হচ্ছে নূরের

কুমিল্লায় যে ঘটনার পর সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে পূজা মণ্ডপ ও হিন্দুদের উপর হামলা হয়েছে, তা সাজানো বলে মনে করছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2021, 04:31 PM
Updated : 18 Oct 2021, 04:31 PM

স্বার্থ হাসিলে ‘রাজনৈতিক অপশক্তি’ এই সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়েছে বলেও সন্দেহ করছেন তিনি।

দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

সেই সমাবেশে নূর বলেন, “কুমিল্লায় কোরআন অবমাননার ঘটনা আমাদের কাছে মনে হয়েছে সাজানো এবং পরিকল্পিত। এই ঘটনার সঙ্গে কোনো হিন্দু-মুসলিম জড়িত নয়। এই ঘটনার সঙ্গে দুর্বৃত্তরা জড়িত। সেই দুর্বৃত্তরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে।”

দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের একটি মন্দিরে কুরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাংচুর চালানো হয়।

এরপর চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ কয়েকটি জেলায় মন্দিরে হামলা হয়, তাতে নিহত হয় অন্তত ছয়জন। রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতি, ফেনীতে দোকান-পাটেও হামলা হয়েছে।

নূর বলেন, “আজকে যখন সারাদেশে যখন মন্দির ভাঙছে, পূজামণ্ডপগুলো ভাঙছে, তখন আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো সেই গতানুগতিক বক্তব্য দিয়ে এক দল অপর দলের উপর দায় চাপাচ্ছে।

“দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে রাজনৈতিক দলগুলো সাম্প্রদায়িক অপশক্তি বলে একটা দায়সারা বক্তব্য দেয়। এই অঘটন যারা ঘটিয়েছে, তারা সাম্প্রদায়িক অপশক্তি নয়, তারা রাজনৈতিক অপিশক্তি।”

অতিদ্রুত বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান নূর। যে সব মন্দির ভাংচুর করা হয়েছে, সরকারি খরচে সেগুলো পুননির্মাণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানান তিনি।

সরকারের সমালোচনা করে নূর বলেন, “কুমিল্লায় যখন হামলা হচ্ছে, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল, তখন তারা সাথে সাথে আসেনি। চার ঘণ্টা পর তারা এসেছে।

“গাইবান্ধার সেই সাঁওতাল পল্লীর ঘটনায় আমরা দেখেছি, পুলিশ সেখানে কীভাবে আগুন দিয়েছিল।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসির নগরে মন্দির ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের আসামিদের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি, সরকার এই অপশক্তিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।

“আজকে সাম্প্রদায়িক হামলার একটি ঘটনারও বিচার হচ্ছে না। সরকার তার নিজ দলীয় থলের বিড়াল বের হওয়ার ভয়ে সাম্প্রদায়িক হামলা-ভাঙচুরের তদন্ত করে না।”

তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন জায়গায় শান্তিপ্রিয় মানুষকে উস্কে দিতে তারা (সরকার) মিছিলে গুলি চালাচ্ছে। মিছিলে গুলি চালিয়ে তারা মানুষ হত্যা করে, মন্ত্রীরা উল্টাপাল্টা বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতিকে উস্কে দিচ্ছে।

“এই ঘটনার সাথে যারাই জড়িত এমপি, মন্ত্রী, বিরোধী দল যাই হোক না কেন সকলকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”

ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লার সভাপতিত্ব্ সমাবেশ শেষে মোমবাতি জ্বালিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত মিছিল করে সংগঠনটি।