নদীর হামিদচর সংলগ্ন অংশে পাওয়া ডলফিনটি অপ্রাপ্তবয়স্ক।
এর আগে ১৫ জুলাই বোয়ালখালীর পূর্ব গোমদণ্ডী এলাকায় কর্ণফুলী নদীর ছন্দারিয়া খালে ভেসে ওঠা পূর্ণ বয়স্ক আরেকটি মৃত ডলফিন মিলেছিল, যেটি আঘাত পেয়ে মারা যায় বলে জানিয়েছিলেন প্রাণীবিদরা।
রোববার নগরীর চান্দগাঁও থানার হামিদচর এলাকার কর্ণফুলী নদী থেকে উদ্ধার করা মৃত ডলফিনটির শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই।
এটি গাঙ্গেয় প্রজাতির উল্লেখ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণীবিদ্যা বিভোগের অধ্যাপক ও হালদা রির্সাচ কেন্দ্রের সমন্বয়ক মনজুরুল কিবরীয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটি বাচ্চা ডলফিন। বয়স আনুমানিক এক বছর। দৈর্ঘ্য সাড়ে তিন ফুট।
“দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি জেলেদের জালে আটকে এটি মারা যেতে পারে।“
ডলফিনটি উদ্ধারের সময় চট্টগ্রাম বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জার মো. ইসমাইল হোসেন ও বন বিভাগের কর্মী অজয় দেব উপস্থিত ছিলেন।
পরে এটি সংরক্ষণের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে গত দু সপ্তাহে কর্ণফুলীতে দুটি মৃত ডলফিন মিলল। তবে ৬ জুলাই হাটহাজারীর মেখল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চানখালী খালের ব্রিজের কাছ থেকে আরেকটি মৃত ডলফিন উদ্ধার হয়েছিল। সেটির শরীরেও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। এই খাল হালদা নদীতে যুক্ত।
২০১৭ সাল থেকে এই পর্যন্ত হালদা নদীর বিভিন্ন অংশে ২৯টি মৃত ডলফিনের খোঁজ পেয়েছেন প্রাণীবিদরা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কর্ণফুলী নদীতে মৃত ডলফিন পাওয়ার এটি দ্বিতীয় ঘটনা।
২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত হালদায় পাওয়া ২৯টি মৃত ডলফিনের মধ্যে সাতটিতে কোনো আঘাতের চিহ্ন পায়নি হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরি। সেগুলোর ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ হয়েছে বলেই তারা ধরে নিয়েছেন।
বাকিগুলোর মধ্যে একটি চর্বি চুরির জন্য হত্যা করা হয়েছিল। তিনটি নদীতে বসানো জালে আটকে এবং অন্যগুলো নৌযানের ধাক্কায় আঘাত পেয়ে মারা যায় বলে ধারণা গবেষকদের।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে গাঙ্গেয় ডলফিনের বাস। একসময় কর্ণফুলীতেও নিয়মিত ডলফিনের দেখা মিলত।
তবে দূষণ-দখল বেড়ে যাওয়ায় ও বেশি সংখ্যায় নানা ধরণের নৌযানের চলাচলের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই নদীতে ডলফিনের দেখা মেলে খুব কম।
প্রজনন সময়ে এই দুই নদীর বেশিরভাগ ডলফিন মোহনা সংলগ্ন হালদা নদীতে বিচরণ করে বলে নদী তীরের বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।