সব পেরিয়ে সিটি ভোটের জন্য প্রস্তুত চট্টগ্রাম

মহামারীর মধ্যে একবার স্থগিত হয়েছিল ভোট, তার ১০ মাস পর সংঘাত-সহিংসতা পেরিয়ে এখন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অপেক্ষায় বন্দরনগরীবাসী।

মিন্টু চৌধুরী জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2021, 03:51 PM
Updated : 26 Jan 2021, 03:51 PM

বুধবার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ ভোটারের ভোটে কে হবেন মেয়র, তা ছাপিয়ে আলোচনা চলছে ভোটগ্রহণ কেমন হয় তা নিয়ে।

একে তো করোনাভাইরাস মহামারী, তার উপর সংঘাতের আশঙ্কা; তার মধ্যে বিএনপি অভিযোগ করছে ভোট কারচুপির। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আশঙ্কা ভোট প্রশ্নবিদ্ধ করার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বিএনপি।

তবে এই নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলছেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৪ হাজার সদস্যও রয়েছে প্রস্তুত।

“নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। সকল কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছানো হয়েছে। বুধবার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট হবে বলে আশা করছি।”

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ষষ্ঠ নির্বাচন গত বছরের ২৯ মার্চ হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় আট দিন আগে তা স্থগিত করা হয়।

এরপর পরিস্থিতির উন্নতি বিবেচনায় ২৭ জানুয়ারি ভোটের দিন ঠিক করে নির্বাচন কমিশন।

বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ হবে মেয়র এবং ৩৯টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ১৪ সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদের জন্য। ৭৩৫টি কেন্দ্রে সম্পূর্ণ ভোটই হবে ইভিএমে।

নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী এবং বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের মধ্যে।

ভোটের প্রচারে পোস্টারে সয়লাব বন্দর নগরী

স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ

উনিশ লাখ ভোটারের সঙ্গে ভোটগ্রহণ কর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মিলিয়ে ভোটের মধ্যে থাকবেন এক নগরীর সাড়ে ১৯ লাখের বেশি মানুষ।

মোট ৭৩৫টি কেন্দ্রে ভোটার ও বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা কর্মী মিলিয়ে গড়ে প্রায় ২৬০০ মানুষের উপস্থিতি ঘটবে আট ঘণ্টায়।

এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে তা কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্টরা।

তবে নির্বাচন কমিশন বলছে, সব স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ভোটের আয়োজন হচ্ছে, সুরক্ষার সব ব্যবস্থাই কেন্দ্রে রাখা হবে।    

ভোটের প্রচারের মধ্যে গত ১৬ দিনে মিছিল, সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন উপায়ে নগরীতে জনসমাগম হয়েছে। যেসব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই ছিল না। গা ঘেঁষাঘেষি করে হয়েছে মিছিল। আর মাস্ক ছাড়া ভোটের প্রচার ছিল নিত্য দিনের ঘটনা।

চট্টগ্রামের জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ডা. মাহফুজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এখনই নির্বাচনের আয়োজন করা উচিৎ হয়নি।

তারপরও ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কেন্দ্র সংখ্যা অনেক বাড়ানো উচিৎ ছিল বলে তার ভাষ্য।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল আলম বলেন, “ঝুঁকি কমাতে সব ব্যবস্থাই আমরা নিচ্ছি। ভোট গ্রহণের সময় কর্মকর্তারা সবাই মাস্ক পরবেন। সব কেন্দ্রে স্যানিটাইজারসহ সব সুরক্ষা উপকরণ থাকবে। কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইভিএমে ভোট নিতে হবে, তা ট্রেনিংয়ে বলে দেওয়া হয়েছে সবাইকে।”

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সহিংসতার ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে ৫৭ শতাংশ ভোট কেন্দ্রে দুইজন করে বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে।

সংঘাতের শঙ্কায় উদ্বেগ

গত সিটি নির্বাচনে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভোট কেন্দ্র দখল এবং জাতীয় নির্বাচনে নানা ঘটনা প্রবাহে ভোট ঘিরে শঙ্কা ছিল নাগরিকদের মধ্যে।

এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলরদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে বিদ্রোহীদের বিরোধের জেরে সংঘাত-সংঘর্ষ।

নির্বাচনী সহিংসতায় ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে দুজন নিহত হয়েছেন। ১৩ জানুয়ারি রাতে ২৮ নম্বর পাঠানটুলি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর এবং একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কাদেরের সমর্থকদের সংঘর্ষে নিহত হন একজন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন আরও কয়েকজন।

এছাড়া গত বছরের মার্চ মাসে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার আগে পাহাড়তলী সরাইপাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও গতবারের কাউন্সিলর মোর্শেদ আক্তারের সমর্থক মো. তানভীর নিহত হন।

সচেতন নাগরিক কমিটির চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আকতার কবির চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভোট নিয়ে যে আতঙ্ক আছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার কোনো শুভ উদ্যোগ না থাকায় আতঙ্ক আরও বেড়েছে। মানুষ যতক্ষণ মনে করবে না সে নিরাপদ, ততক্ষণ কেন ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবে?

“পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, হামলা এসবে পরিস্থিতি আরও নেতিবাচক হয়েছে। আশা করব, ভোটাধিকার নাগরিকরা প্রয়োগ করতে পারবে। তবে সন্দিহান নাগরিকরা ভোট দিতে যাবে কি না সেটা নিয়ে।”

তিনি বলেন, “ভোটের আগের রাত সম্পর্কে খুব খারাপ অভিজ্ঞতাও আমাদের আছে। সেটা বলতে পারব পরে। তবে আশা করব ‍সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভোট হবে।”

নগরীর হালিশহর এলাকার ভোটার মামুনুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এলাকায় প্রচারণার পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো ছিল। সকালে আগে ভোট কেন্দ্রের খবর নিয়ে তারপর ভোট দিতে যাব।”

জামালখান ওয়ার্ডের এক নারী ভোটার বলেন, “গত মেয়র নির্বাচনে ভোট দিতে যাওয়ার আগেই শুনলাম বিএনপির মেয়র প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। প্রার্থী সরে দাঁড়ানোতে আর ভোট দিতে যাইনি। এবার অবস্থা বুঝে যাব। না হয়, যাব না।”

এদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান ভোটারদের নির্ভয়ে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশও তৈরি হয়েছে।”

ভোটের আগের দিন মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ৭৩৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪১৭টি কেন্দ্রকে তারা ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

অর্থাৎ শতকরা হিসেবে ৫৭ শতাংশ কেন্দ্রে থাকবে বাড়তি নজর।

প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। প্রতি ওয়ার্ডে দুটি করে মোবাইল টিম, প্রতিটি থানায় স্ট্রাইকিং ফোর্স রাখা হবে নির্বাচনের দিন।

পাশাপাশি জোনাল উপ-কমিশনারদের অধীনে সাব কন্ট্রোলের মাধ্যমে এবং দামপাড়া ও মনসুরাবাদ পুলিশ লাইনে স্ট্রাইকিং ফোর্স রাখা হচ্ছে।

এছাড়াও র‌্যাব ও বিজিবির ২৫ প্লাটুন সদস্য টহলে থাকবেন বলে জানান সিএমপি কমিশনার।

ভোটের প্রচারে রেজাউল করিম চৌধুরী

গণ্ডগোল যেন কেউ না করতে পারে: রেজাউল

বিএনপি গণ্ডগোল পাকিয়ে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী।

নগরবাসীকে বুধবার সকালে কেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো অবাঞ্ছিত কেউ যাতে কোনো গণ্ডগোল পাকাতে না পারে, সেদিকে নেতাকর্মীদের সচেতন থাকতে হবে।”

বিএনপির অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “তারা জনরায়কে ভয় পায়। তাই তারা নানা অজুহাতে নির্বাচন বানচাল করতে চায় এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।

“তারা চেয়েছিল অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচনকে বানচাল করতে। আমাদের নেতাকর্মীরা ধৈর্য ধারণ করে শান্ত থেকেছে। তাদের পাতা ফাঁদে আমাদের নেতাকর্মীরা পা দেয়নি।”

রেজাউলের নির্বাচনী পরিচালনার প্রধান সমন্বয়ক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভোটে সব পক্ষই প্রচারণা করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে আছে। অবাধ সুষ্ঠু ভোট হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে আশা করছি।

নৌকার প্রার্থী রেজাউল তার জয়ের বিষয়ে ‘শতভাগ’ আশাবাদী বলে জানান।

তিনি বলেন, “উন্নয়ন-সেবা ও আন্তরিকতার জবাবে চট্টগ্রামবাসী নৌকায় ভোট দিতে মুখিয়ে আছে।”

রেজাউল সকালে বহদ্দারহাট এলাকায় বাবা-মায়ের কবর জেয়ারত শেষ করে এখলাসুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তার ভোট দেবেন।

নগরীর পূর্ব ষোলশহরের বহদ্দার বাড়ির সন্তান রেজাউল নগর ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ভোটের লড়াইয়ে এবারই প্রথম।

বর্তমানে তিনি নগর আওয়ামী লীগে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদকের পদে আছেন। চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব ও কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

লেখক হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে রেজাউলের। ‘ছাত্রলীগ ষাটের দশক চট্টগ্রাম’ এবং ‘স্বদেশের রাজনীতি ও ঘরের শত্রু বিভীষণ’ নামে তার দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে।

ভোটের প্রচারে শাহাদাত হোসেন।

গ্রেপ্তার-মামলায় ভয় দেখানো হচ্ছে: শাহাদাত

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কথা ভোটগ্রহণের আগের দিনও জানিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা শঙ্কায় আছি। নিয়মিতই দলের কর্মী, এজেন্টদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। ভোট নিয়ে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে।”

ধানের শীষের ৫৭ জন পোলিং এজেন্টকে পুলিশ ধরে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন শাহদাত।

“ভোট নিয়ে যে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল, তা কিছু অতি উৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডের কারণে ভোটারদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে।”

শাহাদাতের বুধবার সকালে কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শনের পর বাকলিয়া বিএড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার কথা রয়েছে।

ভোটের দিনে মাঝপথে লড়াই থেকে সরে যাবেন কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমার দীর্ঘ ৩৫ বছরের রাজনৈতিক জীবন। ভোট ডাকাতির মুখোশ উন্মোচন করার জন্য হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকব।”

শাহাদাত পেশায় চিকিৎসক। ছাত্রাবস্থা থেকে বিএনপিতে যুক্ত ছিলেন তিনি। ওয়ান-ইলেভেনের শীর্ষ নেতত্বের প্রতি অনুগত হয়ে সক্রিয়তার পর নগর বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে আসেন তিনি।

শাহাদাত এর আগে ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন। সেবার কারাগারে থেকে ভোটে অংশ নিয়ে তিনি পান ১৭ হাজার ৬৪২ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল পেয়েছিলেন ২ লাখ ২৩ হাজার ৬১৪ ভোট।

ভোট তথ্য

>> ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩। নারী ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন।

>> ভোট কেন্দ্র ৭৩৫টি। ভোটগ্রহণ কক্ষ ৪ হাজার ৮৮৮৬টি।

>> ভোট গ্রহণে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ৭৩৫ জন, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ১৪৭০ জন, পোলিং ও কর্মকর্তা ২৯৪০ জন।

>> নিরাপত্তার দায়িত্বে মোট ১৮ হাজার পুলিশ ও আনসার সদস্য। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে র‌্যাবের সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। মোতায়েন থাকবে ২৫ প্লাটুন বিজিবি। 

>> নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন ২০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৬৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবেন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

>> মেয়র প্রার্থী সাতজন। অন্য প্রার্থীরা হলেন- এনপিপি’র আবুল মনজুর (আম), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন (মোমবাতি), স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী (হাতি), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা)।

>> ৪১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন হওরয়া কথা থাকলেও আলকরণ ওয়ার্ডের প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিম মারা যাওয়ায় সেখানে কাউন্সিলর নির্বাচন হবে না। তবে মেয়র পদে ভোটগ্রহণ হবে সে ওয়ার্ডে।

>> ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত হারুন অর রশিদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।    

চসিকের ষষ্ঠ ভোট

ব্রিটিশ আমলে গঠিত চট্টগ্রাম পৌর করপোরেশন সিটি করপোরেশনে রূপান্তরিত হয় ১৯৮৯ সালে। এরপর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় পার্টির নেতা মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। ১৯৯১-১৯৯৩ মেয়াদে বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন এই পদে ছিলেন।

১৯৯৪ সালে প্রথম সিটি ভোটে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। টানা তিন বার তিনি ভোটে লড়ে জয়ী হয়ে মেয়রের চেয়ারে বসেন।

মহিউদ্দিন ২০১০ সালেও ভোটের লড়াইয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এম মনজুর আলমের কাছে প্রায় এক লাখ ভোটে পরাজিত হন।

মনজুর এক মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর আবার প্রার্থী হয়ে হারেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের কাছে।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে ভোট শুরুর তিন ঘণ্টার মধ্যে ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বিএনপির প্রার্থী মনজুর।

আ জ ম নাছির এক মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর এবার আর দলের মনোনয়ন পাননি।