চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মনোনীত হয়েছেন সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
Published : 22 Aug 2020, 09:03 PM
গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব বিলকিস বেগম সাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই মনোনয়ন দেওয়া হলেও বিষয়টি জানা যায় শনিবার।
১৩ মে’র এক প্রজ্ঞাপন অনুসারে এই আদেশ হয়।
এর আগে প্রায় চার বছর ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ছিলেন সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সচরাচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদে স্থানীয় সংসদ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।
তবে চট্টগ্রাম-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর সম্মতিতে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে এই দায়িত্ব দেয়া হয় ২০১৬ সালে। পরে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তার মেয়াদ বাড়ানো হয়।
“সাধারণত সংশ্লিষ্ট আসনের এমপি সভাপতি পদে থাকেন। যেহেতু সাবেক মেয়র মহোদয় এখন পদে নেই তাই স্বাভাবিক নিয়মে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।”
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আ ন ম মিনহাজুর রহমান বলেন, ব্যবস্থাপনা কমিটি চার বছরে তেমন কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। পুরো চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় এই সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা মাত্র ১২টি।
“কোভিড পরিস্থিতির শুরুতে এগুলোই ছিল পুরো চট্টগ্রামে সরকারি হাসপাতালের মোট আইসিইউ। এ সংখ্যা অন্তত ৫০টিতে উন্নীত করা যেত। ক্যান্সার ওয়ার্ডে কেমোথেরাপি মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত পড়ে আছে। উদ্বোধনের দুই মাস পর থেকে এমআরআই মেশিন অকেজো।”
চিকিৎসক নেতা মিনহাজুর রহমান বলেন, “চমেক হাসপাতালে প্রতিদিন শত শত রোগী দালালদের খপ্পরে পড়ে পূর্ব গেটের নির্ধারিত দোকানগুলো থেকে বেশি দামে ওষুধ কিনতে বাধ্য হয়। রোগীদের খাবারের মান নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আছে।
“আগের ব্যবস্থাপনা কমিটি লাশবাহী গাড়ির ভাড়া বিষয়ে নীতিমালা করলেও কয়েক মাস পর থেকে তার চেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে, রোগীর স্বজনরা জিম্মি। এছাড়া হাসপাতালের অনেক জমি বেদখল হয়ে গেছে। এসব জমিতে বাড়ি, গাড়ি পার্কিং এর মত অবৈধ স্থাপনাও আছে। আগের ব্যবস্থপানা কমিটি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”
নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি এসব বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিলে সেবা প্রত্যাশীরা সুফল পাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চমেক কেন্দ্রিক ছাত্রলীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের আধিপত্য আছে।
সম্প্রতি মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারীরা ক্যাম্পাসে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।
এতে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় বিরোধ ও মারামারি হয়েছে। পাল্টাপাল্টি মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেছে।