মহাত্মা গান্ধী তার অহিংস দর্শন নিয়ে আজীবন বেঁচে থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন।
Published : 26 Oct 2019, 12:05 PM
শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চে মহাত্মা গান্ধী সার্ধশত জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুপম সেন বলেন, “মহাত্মা গান্ধীর জীবনটাই একটা দর্শন। তিনি আজীবন অহিংস থেকে সত্যের পক্ষে আন্দোলন করেছেন, সত্যের ব্যাপারে আজীবন অবিচল ছিলেন। দ্বিজাতিতত্ত্ব, দেশভাগ নিয়ে কংগ্রেসের সাথে দ্বিতম হয়েছে কিন্তু গান্ধী কখনো তার জায়গা থেকে পিছপা হননি।”
একুশে পদকপ্রাপ্ত এ অধ্যাপক বলেন, মহাত্মা গান্ধীর যে পথ তা এখনও বিশ্বের রাজনীতিকদের জন্য প্রেরণা।
মহাত্মা গান্ধী তার দর্শন রাজনীতি ও জীবনের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছেন তা এককথায় অসাধারণ মন্তব্য করে অনুপম সেন বলেন, সত্যাগ্রহ আন্দোলন ও অহিংস দর্শন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার মধ্য দিয়ে তিনি আজীবন বেঁচে থাকবেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ, কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক অমিত দে, চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী।
কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেনের সভাপতিত্বে ও কামরুল হাসান বাদলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক গোলাম মুস্তফা।
সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, “একজন ভিন্ন রকমের মানুষ ছিলেন মহাত্মা গান্ধী। তিনি মানবজাতির জন্য অবতারের মতো আবির্ভূত হয়েছিলেন। মানুষের প্রতি তার নিবেদন যে কল্যাণের জন্য, তা তিনি নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন।
“পৃথিবীর দেশে দেশে সংঘাত, হিংসা ও রক্তপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহাত্মা গান্ধীর দর্শন চর্চা আবশ্যক হয়ে পড়েছে।”
আবুল মোমেন বলেন, “মহাত্মা গান্ধী কোনো অবস্থাতেই ভারত ভাগ চাননি, দাঙ্গা, দেশ ত্যাগসহ বিভিন্ন মর্মান্তি ঘটনা ঘটুক চাননি। কিন্তু ঘটেছিল। আজকের দিনে গান্ধী আমাদের কাছে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।”
আলোচনা শেষে সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী ও মানবতার গান পরিবেশন করে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী চট্টগ্রাম জেলার শিল্পীরা। মহাত্মা গান্ধীকে নিবেদিত গীতিনৃত্যালেখ্য পরিবেশন করে সংগীত সংগঠন ‘রক্তকরবী’। আবৃত্তি পরিবেশন করে প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের শিল্পীরা।
দুদিনের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন শনিবারে দুটি বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান হবে। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের আলোচকরা অংশ নেবেন।