চট্টগ্রাম নগরীতে বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ছুরিকাঘাতে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছেন।
Published : 26 Aug 2019, 04:18 PM
নিহতের নাম জাকির হোসেন সানি (১৮)। তার বোনের স্বামী সিআইডি চট্টগ্রাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া) কুতুব উদ্দিন।
সানি এক সময় চট্টগ্রামে বোনের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করলেও এখন ঢাকায় ভাইয়ের বাসায় থেকে পড়াশোনা চালাচ্ছিলেন।
গত বছর ঢাকায় যাওয়ার আগে চট্টগ্রামে ওমর গণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে চলাফেরা ছিল সানির; সেখানে কোনো কোন্দলের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার দুপুরে খুলশী থানার জাকির হোসেন রোডে ওমরগনি এমইএস কলেজের বিপরীতে একটি ভবনের নিচে সানিকে ছুরিকাঘাত করা হয় বলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (বায়েজিদ জোন) সহকারী কমিশনার পরিত্রাণ তালুকদার জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুই পায়ে ছুরির আঘাতসহ ওই তরুণকে কয়েকজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।”
সানির সঙ্গে বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসা আরেক বোন মাহমুদা আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ বিকালে তার ঢাকায় চলে যাওয়ার কথা ছিল। দুপুরে বন্ধুর ফোন পেয়ে সে তাদের সাথে দেখা করতে বাসা থেকে বের হয়।”
সানির বাবার বাড়ি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার কলাপাড়ায়। চার ভাই দুই বোনের মধ্যে সানি সবার ছোট। আগে তিনি চট্টগ্রামে বড় বোনের স্বামী কুতুব উদ্দিনের বাসায় থেকে পড়ালেখা করতেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকা সানির বন্ধু পরিচয় দেওয়া কয়েকজন তরুণ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চট্টগ্রামে থাকার সময় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন জনি। তাদের মতো সানিও ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ওয়াসিম উদ্দিনের অনুসারী ছিলেন।
তারা বলেন, সানির উপর হামলাকারীরাও ওমরগণি এমইএস কলেজের সাবেক ও বর্তমান ছাত্র। তারা ছাত্রলীগে ওয়াসিমের বিরোধী বলয়ে যুক্ত।
হাসপাতালের লাশ ঘরে সানির লাশ নিয়ে কান্নাকাটি করছিলেন তার মা সাজেদা বেগম।
তিনি সানির বন্ধুদের দায়ী করে বিলাপ করছিলেন, রাজনীতি ও প্রেমঘটিত কারণেই তার ছেলে মারা গেছেন।
বোন মাহমুদা অভিযোগ করেন, পাঁচ দিন আগে প্রবর্ত্তক মোড়ে একটি খাবার দোকানে সানিকে মারধর করে তার কয়েকজন বন্ধু। ওই সময় তার বাম হাতে জখম হন।
লাশের সুরতহালকারী খুলশী থানার এসআই মো. নোমান জানান, সানির পিঠে, ডান পায়ের উরুতে এবং বাম পায়ের হাটুঁর নিচে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
এদিকে সানির মৃত্যুর পর হাসপাতালে যান নগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক সাংবাদিকদের বলেন, “প্রাথমিকভাবে জেনেছি পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সানিকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আমরা কিছু তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। সেগুলো যাচাই করছি।”
খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ঘটনার সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেখানে কারা কারা জড়িত, সেটাও শনাক্ত হয়েছে। তাদের ধরতে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে।”
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, আগের দিন একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছিল, সেই ঘটনার জের ধরেও সানিকে হত্যা করা হতে পারে।