পাহাড়ে রক্তপাতে বিএনপি, ইঙ্গিত পাচ্ছেন কাদের

পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘাত ও রক্তপাতে বিএনপির সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2018, 12:03 PM
Updated : 5 May 2018, 07:18 PM

তিনি বলেছেন, “বিএনপি এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। তারা আন্দোলনে ব্যর্থ, কোটা সংস্কারের মধ্যেও ঢুকে গেছে তারেক জিয়া। লন্ডন থেকে, দেখেননি টেলিফোনে সংলাপ? ওটাতে আল্লাহর রহমতে সফল হয়নি।

“এখন গিয়া পাহাড়কে ধরছে। সেখানকার যে বিভেদ, রক্তপাতের মধ্যেও তারা ঢুকে পড়েছে এরকম ইঙ্গিত আমরা পাচ্ছি। এটা আমাদের সর্তক থাকতে হবে।”

রাঙামাটিতে গত দুই দিনে ছয়জনকে গুলি চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত করে শনিবার চট্টগ্রামে মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় একথা বলেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

গত বৃহস্পতিবার রাঙমাটির নানিয়ারচর উপজেলায় নিজ কার্যালয়ে সামনে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমাণ চাকমাকে। তিনি জেএসএসের (এমএন লারমা) অন্যতম শীর্ষ নেতা।

শুক্রবার তার দাহক্রিয়ায় অংশ নিতে যাওয়ার পথে সশস্ত্র হামলায় নিহত হন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের অন্যতম শীর্ষ নেতা তপন জ্যোতি চাকমা বর্মাসহ আরও পাঁচজন।

এই দুটি হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রসিত বিকাশ খীসা নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন জেএসএস (এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) নেতারা।

চট্টগ্রামের সভায় ওবায়দুল কাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির বিষয়ে কথা বলার পাশাপাশি নগর আওয়ামী লীগের নেতাদেরও বিভিন্ন নির্দেশনা দেন।

বিএনপির গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাদ দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিএনপির চেয়ারপারসন দণ্ডিত, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও দণ্ডিত। এখন বিএনপি আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ ও দণ্ডিত দল। আপনি যদি উন্মাদ হন এখন বিএনপির সদস্য হতে পারবেন। কারণ গঠনতন্ত্রে সেটা আর নেই। ৭ ধারা বাদ।”

বিএনপির জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না বলে আবারও হুঁশিয়ার করেন তিনি।

“থ্রেট করছে, বেগম জিয়াকে ছাড়া আসবে না। না গেলে কী হবে? আকাশ ভেঙে পড়বে বাংলাদেশের রাজনীতির উপর? বিএনপি নির্বাচনে না এলে বাংলাদেশে সংবিধান পরিবর্তন হবে না। থ্রেট করে লাভ নেই।”

বিএনপি আন্দোলন করেও সফল হতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন কাদের।

“শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তারা আন্দোলন করে নয় বছরে নয় মিনিটের সফলতাও অর্জন করতে পারেনি। নয় বছরে পারেনি, আর নয় মাসে কী হবে? আমাদের অস্ত্র হল ঐক্য। যে কোনো মূল্যে তা ধরে রাখতে হবে।”

নিজের ভারত সফরের বিষয়ে তিনি বলেন, “নরেন্দ্র মোদীর সাথে আমাদের সাক্ষাৎ হয়েছে। আমাদের নেত্রীর ওপর তার আস্থা আছে।

“সেখানে জাতীয় স্বার্থ নিয়ে বক্তব্য দিয়েছি। বলেছি- উত্তর জনপদ পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতৃবৃন্দকে বলেছি তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়ে, ন্যায়সঙ্গত হিস্যা আদায়ের কথা বলেছি।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতে নেতাকর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের পাশাপাশি ‘শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার’ স্লোগানও দেন।

এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমি বলি- শেখ হাসিনার সরকার, আরেকবার দরকার। আরেকবার আসলেই পরের বার আসব কি না, সেটা আমাদের উন্নয়ন কাজের পর জনগণের মুড বুঝে বলব। এখন বলি- আরেকবার দরকার।”

সভায় নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কেন্দ্রীয় উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, নগর কমিটির সহ-সভাপতি সাংসদ আফসারুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ, নঈম উদ্দিনসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।