চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তীরে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা স্কুলছাত্রীর ছেলেবন্ধু গ্রেপ্তার হলেও তার মৃত্যুর কারণ বের করতে পারেনি পুলিশ।
Published : 03 May 2018, 09:14 PM
কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়ে ধারণা পেতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষার কথা বলেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আরেফীন জুয়েল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি মেয়েটি কীভাবে মারা গেছে। মারা যাওয়ার কারণ জানতে আমাদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে তাসফিয়ার ময়নাতদন্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন দিক মাথায় রেখে তদন্ত করছি। ময়নাতদন্তে বিষক্রিয়া, ধর্ষিত হয়েছে কি না সেগুলো দেখা হচ্ছে।”
এদিকে মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে পতেঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এতে তাসফিয়া আমিনের ছেলেবন্ধু আদনান ও তার আরও পাঁচ বন্ধুকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার সকালে পতেঙ্গা ১৮ নম্বর ঘাট থেকে তাসফিয়ার লাশ উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদনানকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। পরে মেয়েটির বাবা মো. আমিন বাদী হয়ে মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তাসফিয়া নগরীর সানশাইন ইংলিশ গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। আদনানও নগরীর একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়েন।
পরিবার বলছে, ফেইসবুকে পরিচয় থেকে মাসখানেক আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মঙ্গলবার তারা বেড়াতে বের হয়ে গোলপাহাড় এলাকায় ‘চায়না গ্রিল’ নামে একটি রেস্তোরাঁয় খাওয়া দাওয়া করেন। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তাসফিয়া।
এডিসি জুয়েল বলেন, “আমরা কিছুটা নিশ্চিত ওই মেয়েটি যখন পতেঙ্গায় যায় তার সঙ্গে আদনান ছিল না। মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত আদনান মেয়েটির বাবা-মার সাথে ছিল এবং খোঁজ করেছে তাদের সাথে।”
চায়না গ্রিল রেস্তোরাঁর সিসি ক্যামেরার ফুটেছে সেখান থেকে বেরিয়ে তাদের আলাদা দুটি সিএনজি অটোরিকশায় চলে যেতে দেখা গেছে বলে জানান তিনি।
মেয়েটির দুই ধরনের পোশাক নিয়েও ধোঁয়াশায় আছে পুলিশ।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কর্ণফুলী) জাহেদুল ইসলাম জানান, মেয়েটি যে পোশাকে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়েছিল তার সাথে পতেঙ্গায় লাশ উদ্ধারের সময় যে পোশাক পরা ছিল তা এক নয়।
“মেয়েটি কীভাবে, কখন পতেঙ্গায় এলাকায় গেল এবং পোশাক পরিবর্তন করেছে সেটি আমরা অনুসন্ধান করছি।”
তাসফিয়ার বাবার দায়ের করা মামলায় আদনানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্ত্তী জানান, আদনানকে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। বিচারক রোববার শিশু আদালতে এ বিষয়ে শুনানির আদেশ দিয়েছেন।