মঙ্গলবার রাতে মহিউদ্দিনের একান্ত সচিব মুহাম্মদ ওসমান গণি স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত এক বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিশ্বের অন্যতম প্রধান প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীর পানি শিল্প-কারখানার বর্জ্যে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে।
“এর ক্ষতিকর প্রভাবে এই নদীতে ভরা মৌসুমে মা-মাছের আনাগোনা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। কয়েক বছর ধরে হালদা নদীতে মাছের ডিম ছাড়া ও আহরিত ডিম থেকে রেণু উৎপাদনের পরিমাণ ক্রমাগত কমে যাচ্ছে।”
বর্ষীয়ান নেতা মহিউদ্দিন বলেন, শিল্প বর্জ্যে দূষিত হওয়ায় কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট সেতুর পরের অংশ মাছ শূন্য হয়ে গেছে। ফলে মৎস্য শিকারিরা পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছেন।
“এছাড়া জোয়ারের সময় কর্ণফুলী ও হালদা নদী তীরবর্তী এলাকায় শিল্প বর্জ্যে দূষিত পানি ঢুকে পড়ায় কৃষি জমি চাষাবাদের এবং পুকুরের পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।”
পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্দেশে মহিউদ্দিন বলেন, কোনো কোনো শিল্প কারখানা শোধন ছাড়াই বর্জ্য নদীতে ও খালে ফেলছে তা চিহ্নিত করা হোক।
“তাদেরকে বর্জ্য শোধনযন্ত্র স্থাপনে সময় বেঁধে দেওয়া হোক। নদী দূষণ ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ। সর্বোপরি তা জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ডেকে আনে।”
মহিউদ্দিন বলেন, সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বিশ্ব পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন।
দখল ও দূষণে বিপর্যস্ত চট্টগ্রামের দুই প্রধান নদী কর্ণফুলী ও হালদা।
প্রায় দুই বছর ধরে নগরীর বায়েজিদ থেকে কুলগাঁও পর্যন্ত এলাকার শিল্প কারখানা এবং আবাসিক বর্জ্য দুই ইউনিয়নের সাতটি খাল বেয়ে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। এরমধ্যে অধিকাংশ খালের গন্তব্য দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদী।
দূষণের শিকার খালগুলো হল- শিকারপুর ইউনিয়নের কুয়াইশ, বাথুয়া, হামিদিয়া ও কৃষ্ণখালি এবং মাদার্শা ইউনিয়নের খন্দকিয়া, কাটাখালি ও মাদারি।
দূষণের ফলে হালদায় কমছে মা মাছ। এবছর নির্ধারিত সময়ে নমুনা ডিম দিলেও হালদায় ডিম ছাড়েনি মাছ।
দূষণের কবল থেকে হালদা ও জনপদ রক্ষায় ২২ জুলাই মানববন্ধন ও সমাবেশ করে স্থানীয়রা। তারা পরবর্তীতে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা দেয় ওইদিন।
অন্যদিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত বছরের মাঝামাঝি কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে আড়াই হাজার অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন।
এর আগে ২০১০ সালে পরিবেশ অধিদপ্তরের এক জরিপে নদী তীরে গড়ে ওঠা ১৪১টি ছোট বড় কারখানাকে কর্ণফুলী দূষণের জন্য দায়ী করা হয়।