দূষণ: হালদা নদী বাঁচাতে আন্দোলনে স্থানীয়রা

দূষণের কবল থেকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী ও সংলগ্ন জনপদকে বাঁচাতে আন্দোলনে নেমেছে স্থানীয়রা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2016, 01:53 PM
Updated : 22 July 2016, 01:54 PM

শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের মদুনাঘাট এলাকায় হালদা নদীতে নির্মিত সেতু সংলগ্ন সড়কের দুই পাশে মানববন্ধনে জড়ো হয় হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর, মাদার্শা ও বুড়িশ্চর ইউনিয়নের বাসিন্দারা।

তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধনে যোগ দেয় পরিবেশবাদী সংগঠন হালদা রক্ষা কমিটি ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।

সমাবেশে অংশ নেওয়াদের হাতে ব্যানারে লেখা ছিল- ‘বাংলাদেশের নদী, বাংলাদেশের প্রাণ/ দেশ বাঁচাতে নদী বাঁচান’, ‘নদী আমার, জমি আমার/ শিল্প তোমার, বর্জ্য তোমার’, ‘চাষের জমিতে বর্জ্য কেন?’, ‘হালদার মাছ মারব না, দেশের ক্ষতি করব না’।

অবিলম্বে হালদা, সংলগ্ন সাত খাল ও এলাকায় দূষণ বন্ধের দাবি জানানো হয় ওই সমাবেশ থেকে।

পাশাপাশি হালদা নদী রক্ষার এ দাবি আদায়ে পরবর্তীতে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা আসে।

হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, হালদাকে বাঁচাতে চাইলে অবিলম্বে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে।

“বায়েজিদ থেকে কুলগাঁও পর্যন্ত সব কারখানার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে খালে। নদীর সাথে যুক্ত খাল ও সংলগ্ন জনপদের জমি ও জলা পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। খাল বেয়ে সেসব বর্জ্য এসে পড়ছে হালদায়।”

মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, অন্যদিকে রাবার ড্যাম দিয়ে হালদা থেকে পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। উজানে করা হচ্ছে তামাক চাষ। ফলে বিষ ছড়াচ্ছে নদীতে।

দক্ষিণ মার্দাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আখতার হোসেন বলেন, “আমাদের এলাকার খালগুলো আগে অনন্যা আবাসিক এলাকার নালার সাথে যুক্ত ছিল না।

“নালার সাথে যুক্ত করায় আবাসিকের বর্জ্য এলাকায় ঢুকে পড়ছে। শিল্প কারখানার বর্জে্যর দূষণে এলাকার বেশিরভাগ পুকুর নষ্ট হয়ে গেছে।”

বাপা’র সাধারণ সম্পাদক এবিএম আবু নোমান বলেন, “হালদার মত অনন্য নদী বিশ্বে বিরল। কিন্তু আমাদের অবহেলায় নদীটি মরতে বসেছে। হালদায় এ বছর মা মাছ ডিম ছাড়েনি। এ অবস্থা চলতে থাকলে হালদাও বন্ধ্যা নদীতে পরিণত হবে।”

‘দূষণ হটাও, পরিবেশ বাঁচাও, হালদা বাঁচাও’ এই স্লোগান নিয়ে সচেতন নাগরিক সমাজ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম মুন্না বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সমাবেশ থেকে অবিলম্বে শিল্প ও আবাসিক বর্জে্যর দূষণ বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।

“তা না হলে পরবর্তীতে আমরা জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেব। এরপর ধারাবাহিকভাবে পরিবেশ অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ভবন ঘেরাও করব।”

সমাবেশে সংহতি জানায় আহমদিয়া জনকল্যাণ সংস্থা, হাটহাজারী ফেডারেশন, মদুনাঘাট বাজার সমিতি, উড়কিরচর জনতা সংঘ, দীপঙ্কর সোসাইটি ও রেসকোর্স সেচ্ছাসেবী সংগঠন।

বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বুড়িশ্চর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রফিকুল আলম, খাঁর পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরী, মদুনাঘাট বাজার কমিটির সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন মিয়াজী, মো. সেলিম উদ্দিন, মো. সবুর ও মহিউদ্দিন ইমন।