আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
Published : 28 Nov 2024, 07:04 PM
সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে কারাগারে নেয়ার সময় সহিংসতা ও আইনজীবী খুনের ঘটনায় আরও আটজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
নগর পুলিশের উপ কমিশনার (ক্রাইম) রইছ উদ্দিন বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বুধবার দিনভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ওই আট জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনকে সহিংসতার ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া ছবি থেকে শনাক্ত করা হয়েছে।”
মঙ্গলবারের ওই ঘটনায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ; এ পর্যন্ত মোট ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
সেদিন রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে। এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা রইছ উদ্দিন বলেন, ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, “রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে খুন হয় আইনজীবী আলিফ। সড়কে লুটিয়ে পড়া অবস্থায় তাকে বেশ কয়েকজন এলোপাথারি মারধর করছে দেখা যায়।”
মামলা না হলেও তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ছবি দেখে শনাক্ত করা দুই জনের মধ্যে একজন নগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার রাজীব ভট্টাচার্য, অন্যজনের নাম আমান দাশ।
ভিডিওতে হেলমেট পরে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ানোদের মধ্যে যাদের ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, তাদের অনেককেই শনাক্ত করা হয়েছে বলে উপ কমিশনার রইছ উদ্দিনের ভাষ্য।
পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে রুমিত দাশ, গগন দাশ, সুমিত দাশ, নয়ন দাশ, বিশাল দাশ, মনু মেথর, আমান দাশ ও রাজীব ভট্টাচার্য পুলিশের ওপর হামলার মামলার আসামি। পাশাপাশি তারা হত্যাকাণ্ডেরও জড়িত ছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
‘ছবিতে থাকা একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী’
সংঘর্ষের মধ্যে ধারালো অস্ত্র হাতে মাথায় হেলমেট পরা যাদের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, সেখানে একজনকে শুভ কান্তি দাশ নামে চিহ্নিত করেছে বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুভ দাশকে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিজিসি ট্রাস্টের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইন বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভাগের ৩৬ তম ব্যাচের চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী শুভ কান্তি দাশকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিজিসি ট্রাস্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার সালাউদ্দিন শাহরিয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইনজীবী হত্যার সাথে শুভ দাশের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত ছবি এবং বিগত দিনের তার কর্মকাণ্ড নিয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাকে বহিষ্কারের দাবি করেছিল। অ্যাকাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।